সাকিব-মুশফিকদের মাসিক বেতন কত?

ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে যাওয়ার কথা খুব একটা শোনা যায় না। এর আগে ১৯৯৯ সালে একবার ধর্মঘটে গিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তবে এবারের এমন সময়ে এই ধর্মঘটের ডাক দিলেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা, যখন আগামী মাসেই একটি দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট সিরিজ খেলবার জন্য ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের।

সাকিব আল হাসান বলেন, ‘‘ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ম্যাচ ফি হওয়া উচিত এক লাখ, স্যালারি ৫০ শতাংশ বাড়তি প্রয়োজন।’’ তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতা, ভ্রমণ ভাতা এবং আবাসন ভাতা বাড়ানোরও দাবি জানান।

বাংলাদেশে যেভাবে ক্রিকেট লিগ চলছে তা নিয়ে আপত্তি জানান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারা দাবি জানান, প্রিমিয়ার লিগ ও ক্রিকেট লিগ আগের নিয়মে হোক। বিপিএল প্রসঙ্গে মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘‘এবার যেটা হচ্ছে সেটা আমরা সম্মান করি, কিন্তু আগামী বছর থেকে আমরা আগের নিয়মের বিপিএল চাই।’’ স্থানীয় ও বিদেশী ক্রিকেটারদের আর্থিক বৈষম্য দূর করারও দাবি জানান মুশফিকুর রহিম।

বোর্ড কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে নাইম ইসলাম বলেন, ‘আমরা কখনো পাইনি তারা ক্রিকেটারদের নিয়ে কিছু বলছেন বা করছেন।’

কিন্তু কত বেতন পান সাকিব-মুশফিকরা? চলতি বছরে শুরুর দিকের তথ্য অনুযায়ী, ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে থাকা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা পান মাসে ৪ লাখ টাকা করে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকা রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমানরা পান মাসে ৩ লাখ টাকা করে।

‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকা মুমিনুল হক সৌরভ, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামরা পান ২ লাখ টাকা করে। আর শিক্ষানবিশ ক্যাটাগরিতে থাকা সাইফউদ্দিনরা মাসে ১ লাখ টাকা করে পেয়ে থাকেন।

এই বেতনই অবশ্য ক্রিকেটারদের প্রাপ্তির শেষ নয়। পাশাপাশি ক্রিকেটাররা ম্যাচ ফি পেয়ে থাকেন। এর বাইরে ক্রিকেটারদের আয়ের মধ্যে আছে বিপিএল বা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মতো টুর্নামেন্টে বিভিন্ন দলের হয়ে খেলা থেকে পাওয়া আয়। কেউ কেউ বিদেশি ফ্রাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও খেলে আয় করেন। বিভিন্ন পণ্যের দূত হিসেবে কাজ করেও বড় অঙ্কের আয় করেন ক্রিকেটাররা।

ক্রিকেটারদের ১১ দফা দাবি
১. ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াবের) বর্তমান কমিটিকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ক্রিকেটারদের সরাসরি ভোটে ঠিক করা হবে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
২. ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদলের নিয়ম আগের মতো করতে হবে। যে যার পছন্দমতো দলে যাবে।
৩. এ বছর না হোক, তবে পরের বছর থেকে আগের মতো (ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে) বিপিএল আয়োজন করতে হবে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে।
৪. প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি ১ লাখ করতে হবে। চুক্তিভুক্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের বেতন ৫০% বাড়াতে হবে। ১২ মাস কোচ-ফিজিও দিতে হবে, প্রতি বিভাগে অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে বল দিয়ে খেলা হয়, ঘরোয়া লিগে সেই বল ব্যবহার করতে হবে। দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকায় কিছু হয় না, তা বাড়াতে হবে। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া মাত্র ২৫০০ টাকা। তা বাড়াতে হবে অথবা প্লেন ভাড়া দিতে হবে। হোটেল ভালো হতে হবে, জিম ও সুইমিংপুল সুবিধা থাকতে হবে।
৬. জাতীয় দলে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা অন্তত ৩০ করতে হবে ও বেতন বাড়াতে হবে।
৭. দেশি সব স্টাফদের বেতন বাড়াতে হবে। কোচ থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড স্টাফ, আম্পায়ার- সবার বেতন বাড়াতে হবে।
৮. জাতীয় লিগের পর আগে একটি ওয়ানডে লিগ হতো, সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে। বিপিএলের আগে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দিতে হবে।
৯. ঘরোয়া ক্যালেন্ডার চূড়ান্ত হতে হবে।
১০. ডিপিএলের (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ) পাওনা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে।
১১. বিদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটির বেশি খেলা যাবে না, এমন নিয়ম তুলে দিতে হবে। সুযোগ থাকলে সবাই খেলবে।


সর্বশেষ সংবাদ