ছুটি থাকছে না পাবলিক পরীক্ষায়, কমিয়ে আনা হচ্ছে সময়
জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের মতো পাবলিক পরীক্ষায় সময় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ডগুলো। সে অনুযায়ী, পরীক্ষার সময় প্রতিটি বিষয়ের মাঝে বিরতি কমিয়ে আনা হবে। এর আগে জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ এর আলোকে পরীক্ষার ফল প্রকাশের উদ্যোগের কথা বলা হয়। যদিও সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা ১০ দিনের মধ্যে নেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বর্তমানে এই পরীক্ষা নিয়ে অন্তত ১৫ দিন সময় প্রয়োজন হয়। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা হয় প্রায় একমাস ধরে। তবে তা কমিয়ে ২০ থেকে ২২ দিনের মধ্যে করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা দেড় মাসের অধিক সময় ধরে নেওয়া হলেও এক মাসের মধ্যে করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব–কমিটির চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, এখন দীর্ঘদিন ধরে পাবলিক পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লাসসহ অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রমে সমস্যা হয়। কারণ, অনেক প্রতিষ্ঠানেই কেন্দ্র থাকে। এ জন্য পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি জানান, আগামী পরীক্ষা থেকেই সময় কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জুলাইয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল আলম খান পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার এই উদ্যোগকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৪ সালেই পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার কথা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছিলেন। তখন পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচিতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া কোনো বিরতি রাখা হবে না বলে জানানো হয়েছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গঠিত একটি তদন্ত কমিটিও সম্ভব হলে এক দিনে দুই পরীক্ষা অথবা প্রতিদিন বিরতিহীনভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল।
তখন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে তা আর এগোয়নি। গত বছরও এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এমনকি পরীক্ষার মাঝে বিরতি কম দিয়ে সময়সূচি প্রকাশের পর পরীক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন।
এ ধরণের উদ্যোগের ব্যাপারে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার উদ্যোগ ইতিবাচক। দীর্ঘ সময় পরীক্ষার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সমস্যা হয়। তাই পরীক্ষার সময় কমানো হলে সেটা ভালো হবে। আগে সকাল-বিকেল পরীক্ষা নেওয়ার উদাহরণ আছে বলেও জানান তিনি।
কয়েকজন অভিভাবক বলেন, পরীক্ষার্থীদের ওপর যেন চাপ না পড়ে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক করতে হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে না নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়ার অনুরোধ জানান।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির বলেন, আগে পড়াশোনায় এত চাপ ছিল না। পরীক্ষাটি যেহেতু শিক্ষার্থীদের জন্যই, তাই তাদের ভালোটি আগে দেখতে হবে। তারা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়ে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই সময়সূচি ঠিক করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।