অমর নায়ক সালমান শাহ’র চলে যাওয়ার ২৬ বছর আজ
মাত্র ২৫ বছরের জীবন তাঁর। চার বছর কাজ করেছেন চলচ্চিত্রে। এই স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রেখে গেছেন অসাধারণ সব চলচ্চিত্র। বলা যায়, তাঁর সময়ে দেশের চলচ্চিত্রে নতুন একটি ধারার সূচনা হয়েছিল। বাংলা চলচ্চিত্রে এখনও অমর হয়ে আছেন তিনি। আজ তার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের এই দিনে কোটি কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এ নায়ক।
মৃত্যুর ২৬ বছর পরও যার অভিনীত সিনেমা এখনো সমানভাবে প্রিয় দর্শক-ভক্তদের কাছে। যাকে বলা হয় বাংলা সিনেমার ফ্যাশন আইকন। জীবদ্দশায় মাত্র ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয়ের স্বতন্ত্র ধারা আর ফ্যাশন সচেতনতা তাঁকে নিয়ে যায় ভিন্ন এক উচ্চতায়। হয়ে উঠেছিলেন নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী।
আরও পড়ুন: ‘পাপমুক্ত সিনেমা’ মন্তব্য, ব্যাখ্যা দিলেন নায়ক রাসেল মিয়া
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দারিয়াপাড়ায় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। তাঁর বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড়। ছোট ভাই শাহরান চৌধুরী ইভান। বৃশ্চিক রাশির জাতক সালমানের বিনোদনজগতে যাত্রা শুরু হয় বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে। তিনি ইস্পাহানি গোল্ডস্টার টি, জাগুয়ার কেডস, মিল্ক ভিটা, কোকাকোলা, ফানটা এবং জাগুয়ার কেডসের বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেন। ১৯৮৫ সালের দিকে হানিফ সংকেতের ‘কথার কথা’ নামের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন সালমান। তখন অবশ্য তিনি ইমন নামেই পরিচিত ছিলেন।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন সালমান শাহ। প্রথম ছবি দিয়ে তিনি জয় করে নেন অগণিত ভক্ত-দর্শকের হৃদয়। রাতারাতি তিনি হয়ে ওঠেন ঢাকাই ছবির নির্ভরযোগ্য তারকা। সালমানের জনপ্রিয়তার পারদ এতটাই আকাশচুম্বী ছিল যে পরবর্তী সময়ে আর কোনো নায়কই সেই উচ্চতা অতিক্রম করতে পারেননি।
গায়ক হিসেবেও সালমানের পরিচিতি ছিল। ছোটবেলা থেকেই শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল তাঁর। বন্ধুমহলে সবাই তাঁকে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে চিনতেন। ১৯৮৬ সালে ছায়ানট থেকে পল্লিগীতিতে উত্তীর্ণও হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আসার আগেই মায়ের বান্ধবীর মেয়ে সামিরার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সালমান।
অভিনয়ের মাধ্যমে সালমান শাহ যেমন সবাইকে মোহাবিষ্ট করে রাখতেন, ঠিক তেমনি অমায়িক ব্যবহারের জন্য পেয়েছিলেন অনেকেরই প্রশংসা। চলচ্চিত্রে সালমানের জনপ্রিয়তা যখন আকাশচুম্বী, ঠিক তখনই মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হয় তাঁকে। ১৯৯৬ সালের আজকের দিনে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর সংবাদে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল সবাই। সালমানের মৃত্যুর পরও এ দেশে যাঁরা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের কাছেও প্রিয় একটি নাম সালমান শাহ। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ক্ষণজন্মা এ মানুষ ২৬ বছর আগে চলে গেলেও চলচ্চিত্রানুরাগীদের কাছে আজও সালমান শাহ সবচেয়ে বেশি আলোচিত একটি নাম।