রম্য/পদ্মা সেতু পারাপারে হাফ পাস চান ‘কাফি ভাই’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতু উদ্বোধন করবেন। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য টোলের হার নির্ধারণ করেছে সরকার। পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে বড় বাসে ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং মাঝারি ট্রাকে লাগবে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
তবে যাদের নিজস্ব মোটরসাইকেল, বাস কিংবা প্রাইভেট কারের মত যান নেই তাদের জন্য এ সেতু পারাপারে ‘হাফ পাস’ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন ইউটিউবার ও তরুণ লেখক নুরুজ্জামান কাফি। ‘কাফি ভাই’ নামে নিজের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি।
ভিডিওতে হাফ পাসের পক্ষে তিনি নিজের যুক্তি তুলে ধরেছেন। ‘কাফি ভাই’ জানান, অন্যান্য সেতু থেকে পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ আলাদা। কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে এ সেতুতে পায়ে হেঁটে কিংবা সাইকেলে কোনভাবে যাওয়া যাবে না।
তার মতে, যেসব যানে পদ্মা সেতু পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে সেসব যান দেশের অনেকেরই নেই। তাই তারা যদি পদ্মা সেতু পার হতে চান তারা অবশ্যই ভাড়া করে ওইসব যান নিতে হবে। সেক্ষেত্রে এসব মানুষজনদের অতিরিক্ত খরচ গুনতে হবে। সে জায়গা থেকেই মূলত তার হাফ পাসের দাবি। পরে অবশ্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কাছে তিনি তার ভিডিওটি সিরিয়াস কোন দাবি নয় বলে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: নাম ‘পদ্মা সেতু’, প্রজ্ঞাপন জারি
নুরুজ্জামান কাফি একজন তরুণ লেখক ও জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ২০০১ সালের ১ জুলাই তিনি কুয়াকাটার আজিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ঢাকার দারুন্নাজাত থেকে একাডেমিক পড়শোনা শেষে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজে ইংরেজি বিভাগে পড়ালেখা করছেন। পিতা এবিএম হাবিবুর রহমান একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও মাতা হাসিনা বেগম গৃহীনি।
তিনি মূলত ফানি কন্টেন্ট তৈরির মধ্যদিয়ে মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এছাড়া কন্টন্ট তৈরির বাইরে তিনি লেখালেখিও করে থাকেন। তার সর্বশেষ ও তৃতীয় বই ‘অদৃশ্য অসুখ তুমি’ ২০২০ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়। এর আগে প্রথম বই ‘আছি ছিলাম থাকব’ (২০১৮) ও দ্বিতীয় বই ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের BRTC’ (২০১৯) তার সবগুলো বই ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ছাড়া বাংলাদেশে মোটামুটি সব সেতুতেই পায়ে হাঁটা যায়। কিন্তু পদ্মা সেতুতে কেউ সাইকেল নিয়ে অথবা পায়ে হেটে উঠতে পারবে না। মানুষ প্রচন্ড আবেগপ্রবণ প্রাণী। পদ্মা সেতু যেহেতু হয়েছে সেখানে আমাদের জনসাধারণের মন চাবে পদ্মা সেতু দেখতে কিংবা প্রয়োজনের তাগিদের পারাপার হতে। কিন্তু আমাদের যেহেতু মোটরসাইকেল নেই, বাস নেই, মাইক্রো নেই সেখানে আমরা জনসাধারণ কি করব?
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ২৫ জুন
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নির্ধারিত টোল থেকে দেখা যায় সেতু পার হতে মোটর সাইকেলের জন্য টোল দিতে হবে ১০০ টাকা আর কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা। যাদের নিজস্ব মোটরসাইকেল নেই, জিপ নেই, মাইক্রোবাস নেই তারা কিভাবে পারাপার হব? যদি একটি মোটরসাইকেল ভাড়া করি পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য সেখানে আমাদের টোল ভাড়া দেয়া লাগবে ২০০ টাকা। সাথে তেলের বিল তো আছেই।
ভিডিও বার্তায় হাফ পাসের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সেক্ষেত্রে ড্রাইভার তো আমাদের থেকে ৫০ টাকা নেবে না? অবশ্যই সে আমার থেকে আরও বেশি টাকা রাখবে। এখন এ বেশি টাকা দিয়ে তো আমাদের পদ্মা সেতু পারাপার সম্ভব না। সে জায়গা থেকে আমাদের মত আম জনতার জন্য পদ্মা সেতু পারাপারে হাফ পাসের ব্যবস্থা করার।
এ ভিডিওটি কাফির আগের সবগুলো ভিডিওর অংশ বিশেষ বলেই দাবি তার। জনসাধারণকে পরিতোষ করতেই তার এ ভিডিও। এ ভিডিও সম্পর্কে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটা ফারি কন্টেন্ট ছিল। একইসঙ্গে এ ভিডিওর কিছু যৌক্তিকতাও রয়েছে। মূলত আমি ভিডিও এভাবেই করে থাকি। ফানি কন্টেন্ট বানিয়ে থাকি তার মধ্যে যৌক্তিক কথা বলার চেষ্টা করি।
তিনি আরও বলেন, এটা ফানি সম্পূর্ণ একটি ফানি কন্টেন্ট; এটা মাথায় রাখতে হবে। এটা মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য। আমি প্রায় সবগুলো ভিডিওতেই মানুষকে বিনোদন দিয়ে থাকি। পদ্মা সেতুতে হাফ পাসি চাই এটা যেকেউ শুনলেই আমার দিক থেকে তারা আনন্দ পাবে-হাসবে-মজা পাবে বলেই মনে হয়।
পদ্মা সেতু একটি বিশেষ সেতু উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কোনো দাবি না। আমি কন্টেন্টের মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছি যে সাইকেল এবং জনসাধারণ হেঁটে উঠতে পারবে না। বাংলাদেশি মানুষ আবেগপ্রবণ মানুষ। তারা তাদের পদ্মা সেতুতে উঠতেই চাইবে। সেলফি তুলতে চাইবে এটা সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু এটা এরকম ওপেন করে দিলে নিউমার্কেট আর গুলিস্তানের মতো অবস্থা যেতে পারে।