চলে গেলেন ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানের স্রষ্টা
বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় লোকধারার গান ‘লালপাহাড়ির দেশে যা/ রাঙা মাটির দেশে যা’। এ গানের গীতিকার নিভৃতচারী কবি অরুণ চক্রবর্তী। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ভারতের পশ্চিমবাংলার হুগলি জেলার চুঁচুড়ার ফার্ম সাইড রোডের বাড়িতে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এই গীতিকার।
অরুণ চক্রবর্তীর পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই তার ফুসফুসে সমস্যা ছিল। তবে শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন তিনি। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গলমহল অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখান থেকেই কিছুটা ঠান্ডা লেগেছিল তার। পরে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
অরুণ চক্রবর্তীকে পরিচিতি ও খ্যাতি এনে দিয়েছিল ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’; ওই কবিতা পরে গান হয়ে দুই বাংলার সংগীতানুরাগীদের মুখে মুখে ফিরেছে। ১৯৭২ সালে তার লেখা ‘শ্রীরামপুর ইস্টিশনে মহুয়া গাছটা’ শীর্ষক কবিতার উপর ভিত্তি করে ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ তৈরি করা হয়। পরে বাংলা ব্যান্ড ‘ভূমি’ গানটি রেকর্ড করে। ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পায়।
প্রয়াত অরুণ চক্রবর্তীর মরদেহ বাড়ি থেকে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মুক্তমঞ্চে রাখা হয়। পরে শ্যামবাবুর ঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে অরুণের বাড়িতে তার স্ত্রী, দুই ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতিরা ছিল।
অরুণ কুমার চক্রবর্তী সারা জীবনই বাউলের মতো চলাফেরা করেছেন। মাঝেমধ্যে বোহিমিয়ানের মতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন। ঘুরতেন পাহাড়, জঙ্গল ও আদিবাসী এলাকায়। কর্মজীবনে প্রকৌশল বিভাগের উচ্চপদে চাকরিও করেছেন।
নানা বিষয়ে লেখালেখি করতেন অরুণ চক্রবর্তী। রাজনীতি, শিক্ষা থেকে শুরু করে লোকসংগীত; সাধারণ মানুষের কথা লিখতেন তিনি। সবচেয়ে বেশি লিখতেন প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে। ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।