০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩২

হেরে গেলেও ভেঙে পড়িনি: লাইভে মাহি

মাহিয়া মাহি  © সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা অরফে মাহিয়া মাহি। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাক প্রতীক নিয়ে আলোচনার তুঙ্গে থাকলেও ভোটের মাঠে তাকে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়। এরপর থেকে চুপ ছিলেন তিনি। তবে নির্বাচনের দুদিন পর সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। 

নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে মাহি বলেন, ‘হেরে গেলেও ভেঙে পড়েনি। কম ভোট পেলেও আমি মেয়ে হয়ে ভোট করেছি, তা অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত।’ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। 

তিনি বলেন, ‘সবাই নিশ্চয় ভাবছেন আমার প্রচণ্ড মন খারাপ। কিছুটা তো মন খারাপ হবেই। কারণ আমি হেরে গেছি গেমে। নির্বাচন একটা গেম। মন খারাপ কিছুটা, কিন্তু সেরকম কিছু না। প্রতিটি সিচ্যুয়েশনেই আগে নেগেটিভ বিষয়টি মাথায় রাখি, নেগেটিভ হতেই পারে। প্রতিটি সিচ্যুয়েশনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। ইশতেহারে বলা কথা নারীদের ঘর হবে একেকটা কর্মসংস্থান ও তরুণেরা হবেন উদ্যোক্তা। এসব ঠিক কতটা বড় পরিসরে করতে পারব, সেটা সরকারিভাবে যতটা সম্ভব তা ব্যক্তিগতভাবে একটু চ্যালেঞ্জিং। এরপরও ব্যক্তিগত উদ্যোগে যথেষ্ট চেষ্টা করব।’ 

তাঁর বক্তব্যে মাহি বলেন, ‘এই তানোর-গোদাগাড়ীর রাস্তা-ঘাটের যে বেহাল অবস্থা, সারা দেশের রাস্তা যে উন্নত সেখানে আমার তানোর-গোদাগাড়ীতে এখনো গরুর গাড়ি চলার মতো অবস্থা। বৃষ্টি ও বর্ষার সময় হাঁটু কাঁদা হয়ে যায়। সেই রাস্তাঘাট এবং বরেন্দ্রভূমির যে পানির সমস্যা, এই দুটো বিষয়ে দৃষ্টি দেবেন। যিনি নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়েছেন, গত ১৫ বছরে যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি, সেসব এই পাঁচ বছরে যেন তিনি করেন।’ 

আরও পড়ুন: ভিসি-প্রোভিসির নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীকে ঢাবি পরিবারের ফুলেল শুভেচ্ছা

এ সময় আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী এবং নির্বাচিত প্রার্থীর সমালোচনা করেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তাঁর যে জনপ্রিয়তা কমে এসেছিল, তা যেন এই পাঁচ বছরে কাটিয়ে ওঠেন তিনি। আমি কিন্তু মাঠে আছি। তা না হলে আগামী পাঁচ বছর পর ফের নির্বাচনী মাঠে দেখা হবে। তার তো জনপ্রিয়তা শূন্য। যতটা ভোট পেয়েছেন সেটা নৌকার জন্য। তো আপনাদের এত খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই।’ 

নায়িকা মাহি আরও বলেন, ‘আমার জন্য মাঠে যারা কাজ করেছে, আগামী পাঁচ বছরে আমার জন্য যারা কাজ করবে সেসব কর্মী-সমর্থকদের আপনারা (ক্ষমতাবান) যদি কোনোরকম ডিস্টার্ব করেন, তাহলে মনে রাখবেন, আমি কিন্তু দুর্বল না। আমি মানসিকভাবে যতটা শক্তিশালী, কর্মীদের ন্যূনতম অপমানেও আমি সর্বোচ্চ লড়াই করব। যে কর্মীরা আমার জন্য কাজ করেছে, তাদের জন্য দরকার হলে আমি জানও দিতে পারি।’ 

মাহি আরও বলেন, ‘পাঁচ বছরে আপনারা (নির্বাচিত প্রার্থী) এমন এমন কাজ করবেন, যাতে মানুষের হৃদয়ে আপনাদের জায়গা হয়। যিনি নতুন সংসদ সদস্য হয়েছেন তার প্রতি আমার পরামর্শ, আপনারা মানুষের উপকারের জন্য যে সুপ্রিম পাওয়ার পেয়েছেন পাঁচ বছরের জন্য, সেটা কাজে লাগাবেন।’ 

উল্লেখ্য, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী এক লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট পেয়ে আবারও বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট। আর মাহি পেয়েছেন ৯ হাজার ৯ ভোট। ১৭টি আসনে কোনো ভোটই পাননি মাহি।