২৮ মে ২০২৩, ১৫:১৯

আমি কোথাও গেলে মেয়েদের মধ্যমণি হই: জায়েদ খান

চলচ্চিত্রের নায়ক জায়েদ খান  © সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়ক জায়েদ খান ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয় নিয়ে বরাবরই খবরের উপাদান হন। বছরজুড়েই বিভিন্ন কারণে আলোচনা-সমালোচনায় থাকেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে মেয়েদের মধ্যমণি দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি কোথাও গেলে মেয়েদের মধ্যমণি হই’। কেউ কেউ বলছে আমি ইরোটোমেনিয়া রোগে আক্রান্ত। আমার মনে হয়, আপনাদের মানসিক রোগের ডাক্তারের কাছে আগে যাওয়া উচিত। 

জায়েদ বলেন, বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানে গেলে আমি মেয়েদের মধ্যমণি হই। বিয়ে করিনি, ব্যাচেলর বলে সবাই আমাকে অন্য চোখে দেখে। ‘‘আমার রাশিটাই এমন, আমি সবার সঙ্গেই ভালো ব্যবহার করি। আমার কাজগুলোকে আমি খুব এনজয় করি। আমি কোনো কথা বললেই, সেটাকে হয়তো অনেকে বাজেভাবে ব্যাখ্যা করেন। 

একটা হিরোকে দেখে যদি কোনো মেয়ে কাছে এসে কথা না বলে, কোনো মেয়ে যদি এসে সেলফি না তোলে, ঘাড় না ঘুরিয়ে দেখে, তাহলে আমার মনে হয় তার হিরোগিরি করার কোনো দরকারই নেই। সিনেমা ও ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের অনেক মেয়ে ভক্ত থাকবে। এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এটা শুধু তার বেলায় নয়, সব তারকার সঙ্গে হয়।

তিনি বলেন, ‘‘আমি এই কথাগুলো বলেছিলাম সরলমনে। কিন্তু কথাগুলোকে অনেকে ব্যাঙ্গ করেছে, কেউ বলেছে এটা একটা রোগ জায়েদ খানের। কতটা মানসিকভাবে অসুস্থ তারা। আপনারা তো নিজেরাই আজকে দেখলেন। এটা আরও ৫-১০ বছর আগে থেকেই এমন হয়।’’

এদিকে যারা তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছেন তাদের জায়েদ বলেন, কেউ কেউ এটাকে ‘ইরোটোমেনিয়া’ নামে একটি রোগ হিসেবে নাম দিয়েছে। তারাই মেন্টালি সিক। আমার মনে হয়, আপনাদের মানসিক রোগের ডাক্তারের কাছে আগে যাওয়া উচিত।’’

আরও পড়ুন: সৃজিতের বিচ্ছেদের খবরের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত না: মিথিলা

অভিনেতা আরও বলেন, ‘‘আমি কোথাও গেলে বা বিয়েশাদির অনুষ্ঠানে গেলে আমি মেয়েদের মধ্যমণি হই। এটা তো বাজে কিছু না, তারকা বলেও না। আমি কাজ করি হয়তো তাই। আমি সবসময় বলেছি, এটা আমার একার ক্ষেত্রে না শুধু, আরও যারা নায়ক আছেন তাদেরও নিশ্চয়ই হয়। আমার একটু বেশি হয়, আমি হয়তো বিয়ে করিনি, ব্যাচেলর বা যাদের বিয়েশাদি হয়নি, তাদের তো এমনিতেই একটু অন্য চোখে দেখে সবাই। বিশেষ করে মেয়েদের, বলে যে তার বিয়ে হয়নি।’’

জায়েদ বলেন, আমিও তো একসময় নায়িকার ছবি মানিব্যাগে নিয়ে ঘুরতাম। সেটা কি অন্যায় কিছু ছিল, নিশ্চয়ই না। আজকেও কিন্তু মেয়েরা আমার কাছে এসে ছবি তুলেছে, সোভার ওয়েতে কথা বলেছে, বিষয়গুলোকে যারা খারাপভাবে বলছে, এটা মোটেও কাম্য নয় কিন্তু। আমরা নিজেরাই যদি নিজেদেরকে ছোট করেন, তাহলে কিভাবে হবে। আমাকে পছন্দ না হলে, দেখবেন না। আমাকে ফেসবুকে ফলো করছেন, ইনবক্সে কথাও বলছেন, আবার এগুলোকে বাজেভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে শেয়ার করছেন। এটা কিন্তু আপনার পারিবারিক শিক্ষা, আপনার আর মানসিক দৈন্যতাটা প্রকাশ পায়।

শুধু আমার না, যে কোনো শিল্পীরই যদি কিছু ভালো না লাগে, তাকে দেখবেন না। গঠনমূলক সমালোচনা করেন। কিন্তু যখন বাজে কিছু পোস্ট দেয় তখন সেটা দেখে ভীষণ খারাপ লাগে যে, এই দেশের মানুষদেরকে এতো ভালোবাসি। এদের জন্য কখনও মনে হয়নি বিদেশে চলে যাই। দেশের ও সংস্কৃতির টানে, দেশেই রয়ে গেছি। সর্বোচ্চ পড়াশুনা করে এসেও চাকরি করিনি। চলচ্চিত্রে কাজ করছি। মানুষকে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

অভিনেতা আরও বলেন, তার মানে এই নয় যে আপনারা একটি শিক্ষিত মানুষকে যা ইচ্ছে তাই ট্রল করে যাবেন, লিখে যাবেন এটা একদমই ঠিক না। যদিও আমি এসব নিয়ে মাথাই ঘামাই না। কারণ, যে গাছে ফল বেশি সেখানে মানুষ ঢেলও দেয় বেশি। আমি যতই বলি না কেন, তারা থামবে না কিন্তু। এটা দেখার পর আবার অন্য কিছু বের করবে। 

এদেরকে আপনি থামাতে পারবেন না। এদের জন্মই হয়েছে মানুষকে ট্রল করার জন্য। এইতটুকু সময় যদি নিজের যোগ্যতার জন্য কিছু করতো, তাহলে তার যোগ্যতার অর্জন বেড়ে যেত। সেটা না করে আরেকজন কে নিয়ে ট্রল করছে। আমার মনে হয় এখান থেকে আপনাদের বের হওয়া উচিৎ।

উল্লেখ্য, জায়েদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এমএ সম্পন্ন করেছেন। জায়েদ খান এসএসসি পাস করার পর ১৯৯৫ সালে ঢাকায় আসেন। থাকতেন বোনের বাড়িতে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল এলাকায়। এরপর ঢাকা সিটি কলেজে ভর্তি হন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। জায়েদরা চার ভাইবোন সকলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন।