ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা আহামরি কিছু নয়: অধ্যাপক রেহমান সোবহান
খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা আমাদের দেশে প্যারালাল শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। তবে মানের দিক থেকে তা যে আহামরি কিছু, এমন নয়। শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ মাদ্রাসা শিক্ষায় ধাবিত হচ্ছে, তবে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা সেখানে মেলে না। মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ম্যানেজিং কমিটিগুলো রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত। এতে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় শিক্ষা খাতের রাজনৈতিক অর্থনীতি শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থী তৈরি করা হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় শাস্ত্রীয়, মানবিক গুণবালি সম্পন্ন জ্ঞানমূলক ধারা বাদ পড়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নিম্নমানের শিক্ষা নিয়ে মূলধারায় প্রবেশ করছে, যা অশনিসংকেত।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা ধারা একই সঙ্গে চলায় শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিডির ট্রাস্টি ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ সাবেক অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক কে এম এনামুল হক, ডেইলি স্টারের সহকারী সম্পাদক ইরেশ ওমর জামাল এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রতিনিধি টনি মাইকেল গোমেজ।
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, উচ্চ শিক্ষার জন্য আমরা স্ট্র্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করেছিলাম। সরকার তা গ্রহণ করলেও বাস্তবায়ন করেনি। শিক্ষা ক্ষেত্রে বহু ভালো সিদ্ধান্ত হয়, তবে তা বাস্তবায়িত সব সময় হয় না। ক্ষেত্র বিশেষে আমলাতন্ত্রও একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, মানসম্মত গ্র্যাজুয়েটরাই মানসম্মত শিক্ষক তৈরি করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ মানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে ধরে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজারমুখী শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার মূল লক্ষ্যকে ব্যাহত করছে। মানবিক, কলা, সংস্কৃতি, নৈতিকতা- শিক্ষা থেকে দিন দিন উঠে যাচ্ছে।