২৯ জুলাই ২০২৫, ০০:৩৩

আইইএলটিএস পরীক্ষায় অডিও বিভ্রাট, ক্ষতিগ্রস্তদের বিকল্প সুযোগ দিয়েছে আইডিপি

আইডিপি ও তার লোগো  © সংগৃহীত

গতকাল (২৭ জুলাই) একাধিক আইইএলটিএস পরীক্ষাকেন্দ্রে চরম অব্যবস্থাপনা ও অডিওযন্ত্রের ত্রুটির অভিযোগ উঠে আসে, যা বহু শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কুশিয়ারা কনভেনশন হল ও পেনস্টন ইংলিশ ইনস্টিটিউট, ধানমন্ডি—এই দুই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা সময় ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, অডিও সমস্যাসহ নানা দুর্ভোগের মুখে পড়েন। এ অবস্থায়, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইডিপি বাংলাদেশ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন জনপ্রিয় ইংরেজি শিক্ষক ও আইইএলটিএস প্রশিক্ষক মুনজেরিন শাহিদ।

পরীক্ষার শুরুতেই শ্রুতির (Listening) অংশে হেডফোনে শব্দ না আসা, মাঝপথে অডিও বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিকল্প ব্যবস্থা না থাকা—এমন একাধিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, পরীক্ষার শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পরে এবং শেষ হয় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে। এই দীর্ঘ সময় ক্ষুধা, ক্লান্তি ও মানসিক চাপ নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় তাদের। পরীক্ষা কক্ষে ছিল না পর্যাপ্ত পানি বা খাবারের ব্যবস্থা, এমনকি বাইরে অপেক্ষমাণ অভিভাবকরাও দীর্ঘ সময় কোনো তথ্য না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন।

এমন ঘটনায় আইডিপি বাংলাদেশ অফিস কুশিয়ারা কনভেনশন হলে পরীক্ষা দেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাঠানো ইমেইলে জানানো হয়—তারা বিনামূল্যে Standard IELTS (Paper Based) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন; কিংবা চাইলে বিনামূল্যে UKVI IELTS (Computer Based) পরীক্ষাও দিতে পারবেন; পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর, ফলাফল পুনর্বিবেচনার (EOR) সুবিধাও তারা ফ্রিতে নিতে পারবেন;  এমনকি ফলাফল প্রকাশের পরও যদি কেউ নিজের স্কোরে সন্তুষ্ট না হন, ফের বিনামূল্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে।

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে এনসিপির পদযাত্রা শেষে অসুস্থ হাসনাত আব্দুল্লাহ

অভিযোগকারীদের একজন, মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম ফেসবুকে জানান, ‘আমি লিসনিং পার্ট ১-এ এক পাশের হেডফোন কাজ না করায় সমস্যায় পড়ি। পার্ট ২ ও ৩ ঠিক থাকলেও পার্ট ৪-এ হেডফোন বারবার পজ হতে থাকে, একপর্যায়ে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে পরিদর্শককে জানালে তারা নতুন হেডফোন আনেন, কিন্তু পরিবর্তন করতে দেরি হয়। পরে তারা আমাকে অন্য টেবিলে বসান, কিন্তু তখন অডিওর মাত্র ১২-১৪ সেকেন্ড বাকি ছিল। আমি কিছুই শুনে উত্তর দিতে পারিনি। এর প্রভাব আমার রিডিং ও রাইটিংয়েও পড়ে।’

তিনি আরও জানান, পরীক্ষার পরপরই তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং IDP-কে ইমেইল করেছেন। তার ভাষায়, ‘এটা আমার আইইএলটিএস ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা। পেনস্টন ইংলিশ ইনস্টিটিউটের মতো একটি আইডিপি সেন্টার এমন অব্যবস্থা করবে—এটা ভাবিনি। শুধু সাধারণ শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মান তো দূরের কথা, ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও ছিল না।’

অনেক পরীক্ষার্থী সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, ‘যেখানে একবার আইইএলটিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে ২৮,০০০ টাকার বেশি ফি লাগে, সেখানে এমন অনিয়ম অগ্রহণযোগ্য। কোনো ব্যাকআপ প্ল্যান ছাড়া পরীক্ষার্থীদের মুখোমুখি করা হয়েছে বিশৃঙ্খলা ও অবহেলার।’

আইডিপি কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের ইমেইলে প্রেরিত প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে কীভাবে ও কবে বাস্তবায়ন হবে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ব্যাখ্যা চেয়েছেন অনেকে।

এ নিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি আইডিপি বাংলাদেশের অফিসিয়াল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।