৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:১৬

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বুলিং’ প্রতিরোধে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে

প্যানেল আলোচনায় ‘বুলিং’ প্রতিরোধের নানা বিষয়গুলো তুলে ধরেন বক্তারা।  © টিডিসি ফটো

দেশের ইংরেজি মাধ্যমসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘বুলিং’ (শারীরিক ও মানসিকভাবে অপদস্থ করা) প্রতিরোধে সবার একসাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষালয়গুলোয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একসাথে কাজ করতে হবে। সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবার আরও বেশি সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) স্কুলে বুলিং প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে দেশের অন্যতম ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষালয় স্যার জন উইলসন স্কুলে আয়োজিত ‘রোড টু ওয়েলনেস’ অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইউনাইটেড সিটিতে অবস্থিত বিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের আলোচনার পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং মতামত তুলে ধরেন।

আয়োজনের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন স্যার জন উইলসন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। টিডিসি ফটো।

এতে সাইকোলজিক্যাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস কেয়ার লিমিটেডের (পিএইচডাব্লিউসি) লাজিনা আমিন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা ওয়ান সার্কলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফারিন দৌলা বুলিং এবং শিশুর মানসিক-শারীরিক বিকাশ নিয়ে আলোচনা করেন।

প্যালেন আলোচনায় উঠে আসে ‘বুলিং’ (শারীরিক ও মানসিকভাবে অপদস্থ করা) শিশুর জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতার অভাব শিশুর বিকাশে মারাত্বক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজকেও এ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। এই সচেতনতাই শিশুর সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: দেশে বাড়ছে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা

এছাড়াও শনিবার স্যার জন উইলসন স্কুলে বিদ্যালয়ে ‘বুলিং’ প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে ‘বুলিং’ প্রতিরোধ এবং  প্রতিকারে প্যানেল আলোচনার পাশাপাশি সৃজনশীল ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্যার জন উইলসন স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আলোচনা শেষে নানা আয়োজনের মাধ্যমে বুলিংয়ের ক্ষতিকর দিক এবং প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে ধারণা নেন অংশগ্রহণকারীরা।

সকাল থেকে নার্সারী পড়ুয়া নিজের বাচ্চাকে নিয়ে ‘রোড টু ওয়েলনেস’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন নাদরিন সুলতানা। এ অভিভাবক মনে করেন, এ ধরনের আয়োজন আরও বেশি বাড়ানো দরকার। যাতে সবার মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা বাড়ানো যায়। তার মতে, এ ধরনের আয়োজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন করতে উৎসাহিত করবে।

‘রোড টু ওয়েলনেস’ অনুষ্ঠান শেষে স্যার জন উইলসন স্কুলের শিক্ষকরা। টিডিসি ফটো।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা স্কুলে বুলিং প্রতিরোধ ও কার্যকরী পদক্ষেপ, স্বাস্থ্যকর এবং চাপমুক্ত জীবনযাপন, বিভিন্ন সামাজিক প্রত্যাশা, ডিজিটাল জগতে সুস্থতা, পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবন ভারসাম্য নিয়েও অভিমত দেন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা।

স্যার জন উইলসন স্কুলে এ আয়োজনে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত ছিল দিনভর। এতে বুলিং প্রতিরোধে সবাই এক হয়ে কাজ করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ‘আর্ট থেরাপিউটিক’, ‘স্টোরি কর্নার’, ‘গো গ্রিন উইথ টেরাহোপ ক্লাব’, ‘ওয়াকথন’ এবং ‘কমেডি সার্কেল’ নামে সৃজনশীল আয়োজনের মাধ্যমে বেশ আকর্ষণীয়ভাবে বুলিংয়ের ক্ষতিকর দিক ও এর প্রতিকারগুলো তুলে ধরা হয়।

দিনভর নানা আয়োজন ছিল শিশুদের জন্য। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। টিডিসি ফটো।

সবার মাঝে 'বুলিং' নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্যার জন উইলসন স্কুলের এ ধরনের আয়োজন আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মিডল ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রেজওয়ানা করিম সারা। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, তারা শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়াতে ‘রোড টু ওয়েলনেস’র মতো আয়োজনগুলোয় জোর দিচ্ছেন।

রেজওয়ানা করিম সারা মনে করেন, সবার সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ‘বুলিং’য়ের মতো বিষয়গুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। সেজন্য সবার অংশগ্রহণ এবং সমন্বিত কাজের ওপরও জোর দেন এই শিক্ষক।