ঢাকায় নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের যাত্রা শুরু

ঢাকায় নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গ্রাউন্ডব্রেকিং অনুষ্ঠান
ঢাকায় নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গ্রাউন্ডব্রেকিং অনুষ্ঠান  © টিডিসি ছবি

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টি. কে. গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি দেশজুড়ে আন্তর্জাতিক চেইন স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র হাতিরঝিলে তৈরি হচ্ছে প্রথম ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ‘নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’, যা কানাডার বৃটিশ কলাম্বিয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও প্রশাসনের অধীনে গ্লোবাল অফশোর স্কুল প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে পরিচালিত হবে। 

আজ রবিবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গ্রাউন্ডব্রেকিং অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য মেজর ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী (অব) ও কানাডা হাই কমিশনের চার্জ ‘অ্যাফেয়ার্স অ্যাড অন্তর্বর্তীকালীন’ অ্যাঞ্জেলা ডার্ক।

আরও উপস্থিত ছিলেন নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান মো. আমিরুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আনজাম আনসার, কানাডার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার আন্তর্জাতিক শিক্ষার পরিচালক অ্যালান শ্রোডার ও নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল ক্রিস্টাল জাউস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা অত্যন্ত মেধাবী জাতি। আমরা শুধু মেধাবী জাতি না। আমরা যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি এবং যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমরা আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব সব জায়গাতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের শতভাগ ছেলেমেয়েকে শিক্ষিত করবো এরকম একটি টার্গেট আমাদের রয়েছে। এখন আমরা ৭৫ শতাংশে রয়েছি। হয়তো হিসেবে ১/২ শতাংশ এদিক-ওদিত হতে পারে। আমাদেরর কোয়ালিটি এডুকেশন দরকার। এই সেক্টর থেকে যারা অবদান রাখবে তাদের যদি শিশু বয়স থেকে নাসিং করলে সেই জায়গাটাতে নিয়ে যেতে পারবো। তাহলে মেধার বিকাশ হবে। মেধাবী তরুণরা বেরিয়ে আসবে। তারই একটি সোপান এই স্কুলটি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইতোমধ্যে বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুল বিগত ৩৫ বছর ধরে বিশ্বের ৮টি দেশে পরিচালিত হচ্ছে; ৯ম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এই স্কুল পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে টি. কে. গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি। এই স্কুলটি সরাসরি বৃটিশ কলাম্বিয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত পাঠ্যক্রম, প্রত্যয়িত প্রিন্সিপাল ও শিক্ষকগণ দ্বারা পরিচালিত হবে, যারা কানাডিয়ান নাগরিক। এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ইত্যাদির মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নথিভুক্ত হতে পারবে। 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যেহেতু স্কুলটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত এবং বিশ্বের সেরা র‌্যাংক স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম; তাই, এটা শিক্ষার জগতে বাংলাদেশকে একটি বিশিষ্ট স্থানে পরিচিত করে তুলবে এবং একই সাথে শিক্ষাখাতে আরেকটি মহৎ উদ্যোগের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দেশ এবং বর্হিবিশ্বে একটি দুর্দান্ত ভাবমূর্তি ও তৈরি করতে সক্ষম হবে।

টি. কে. গ্রুপ কর্তৃক স্কুল কার্যক্রম
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, কানাডার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের টি. কে. গ্রুপের সমন্বয়ে নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ২টি ক্যাম্পাস দিয়ে স্কুলের কার্যক্রম শিগগিই শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাস-১, দিলু রোডে অবস্থিত প্রি-স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এবং ক্যাম্পাস-২ দক্ষিণ কুনিপাড়াতে অবস্থিত স্কুল ভবনের নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুততার সাথে চলমান রয়েছে।

স্কুলের মূল বৈশিষ্ট্য
কানাডিয়া স্কুল কোড অব কন্ডাক্ট এন্ড প্রটোকলের ভিত্তিতে পরিচালিত স্কুলের মূল বৈশিষ্টসমূহের মধ্যে রয়েছে:
১) ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুল প্রোগ্রামটি বিশ্বে চালু রয়েছে। বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুল প্রোগ্রাম এর আওতায় ১৯৯৮ সাল থেকে কানাডার বাহিরেও বৃটিশ কলাম্বিয়া-প্রত্যায়িত শিক্ষকদের দ্বারা বৃটিশ কলাম্বিয়া পাঠ্যক্রম অফার করার জন্য অনুমোদিত করেছে যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে শিক্ষার মানকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

২) বর্তমানে বিশ্বে অনুমোদিত মোট ৮টি দেশে (বাহরাইন, চীন, কলম্বিয়া, মিশর, ফ্রান্স, জাপান, কাতার ও থাইল্যান্ড) বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুল প্রোগ্রামটি চলতি বসছে আরও ৩টি দেশে পরিচালনার জন্য অনুমোদন প্রাপ্ত হয়েছে (বাংলাদেশ, কাজাকাস্তান ও তাইওয়ান)।

৩) বিশ্বে আনুমানিক ১২ হাজার শিক্ষার্থী বৃটিশ কলাম্বিয়া অফশোর স্কুলে অধ্যয়ন করছে, যা এটিকে কানাডার শিক্ষাক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় প্রোভিন্সে পরিণত করেছে।

৪) ব্রিটিশ কলাম্বিয়া পাঠ্যক্রম, পড়ার উপকরণ, শ্রেণিকক্ষের মান এবং ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালোরেট (আইবি) পাঠ্যক্রম সব বিকল্পসহ শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।

৫) শিক্ষার্থীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ইত্যাদির মতো কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশে সরাসরি এনরোল করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে।


সর্বশেষ সংবাদ