‘তোমরা এখন সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছো, নট ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে’
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইটেক পার্ক নির্মাণের বিরোধীতাকে সরকারের বিরোধীতা হিসেবে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.একিউএম মাহবুব।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে হাইটেক পার্ক অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘এটা আমার আনা নয়, আগের ভাইস চ্যান্সেলর এনেছেন। ইতোমধ্যে গেজেটও হয়ে গিয়েছে। এখন জায়গা পরিবর্তনের ক্ষমতা আমার নেই, জায়গা পরিবর্তন করলে মন্ত্রণালয় করতে পারে। আর আমি এটা না আনলেও আমি হাইটেক পার্কের পক্ষে। আমি এখনও মনে করি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশীর্বাদ।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্ণারে দেয়া হয়েছে। আর এখানে কারা এন্ট্রেন্স নিবে সেটিতো আমরা দেখবো। তোমরা ওয়েল থটে চিন্তা ভাবনা করো। তোমরা কিন্তু এখন সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছো, নট ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে।'
আরও পড়ুন: সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু কৌশল
তবে ভাইস চ্যান্সেলরের এমন বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা সরকার কিংবা হাইটেক পার্কের বিরোধিতা করছেন না। তারা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্লান উপেক্ষা করে হাইটেক পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদ করছেন।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সজল আহমেদ বলেন, ‘আমরা কেউই আইটি পার্কের বিরোধিতা করছি না। আমরা চাই আইটি পার্ক হোক। কিন্তু সেটা ক্যাম্পাসের বাইরে। ক্যাম্পাসের বাইরে যথেষ্ট জায়গা আছে। সেখানে আইটি পার্ক করুক। তখন আরো আমরা খুশি হবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন এমনিতেই কম। এরপরও যদি ৪ একর দিয়ে দেয় তাহলে বাকি থাকলো কতো? আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক যে চাহিদা থাকে সেইগুলো পূরণ না করে কিভাবে আইটি পার্কের চিন্তা মাথায় আসে? আমাদের যে যে অবকাঠামো দরকার সেই অবকাঠামোতে হাত কেন দিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন? আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চাই। যেখানে একটা শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে।’
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর সূত্রে জানা যায়, যেই স্থানে কাজ শুরু হয়েছে এই জায়গাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্লান অনুযায়ী প্রথম ফেজে অডিটোরিয়াম এবং দ্বিতীয় ফেজে টিএসসি নির্মাণ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে জায়গাটি হাইটেক পার্ককে দিয়ে দেয়ায় অডিটোরিয়াম, টিএসসি নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় একাডেমিক ভবনের স্থানে হাইটেক পার্ক নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তারা এর প্রতিবাদ জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্রতা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্লান অক্ষুন্ন রেখে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করে তার একটি স্থানে হাইটেক পার্ক নির্মানের দাবি জানান।