ছাত্রলীগের কর্মসূচির অনুমতি নেওয়া হয়নি, বলছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের ব্যানারে রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা জানত না বুয়েট কর্তৃপক্ষ। সাবেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এর অনুমতি নেওয়া হয়েছিল সাবেক ছাত্রদের নামে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর পর এমন দাবি করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বলা যায়, তারা অনুমতি নিয়েছে, আবার নেয়নি। অনুমতি নেওয়ার সময় সাবেক শিক্ষার্থী, পুনর্মিলনী করবে বলে জানায়। কিন্তু তারা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে প্রোগ্রাম করতে গেলে বাধা দেয় শিক্ষার্থীরা।
যদি জানতাম, তাহলে অনুমতি দিতাম না। তাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার অধিকার আছে।
বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, তারা সাবেক ছাত্র হিসেবে অনুমতি নিয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়টি জানাননি। যখন অনুমতি নেওয়া হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল দোয়া অনুষ্ঠান করবে। কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে করার কথা বলা হয়নি।
এ ঘটনায় আজ রবিবার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভায় শিক্ষার্থীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ব্যানারের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা প্রশাসনকে জানাবেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান উপস্থিত থাকবেন। এদিন দুপুর ১টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে শনিবার রাতে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের ব্যানারে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তবে আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে দোয়ার আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন: ১৩ বছর ধরে বুয়েট নিয়ন্ত্রণ করছে সিণ্ডিকেট—দাবি নাজমুলের
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত অনুষ্ঠান শেষে করে সেখান থেকে চলে যান ছাত্রলীগের নেতারা। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বুয়েটের অডিটোরিয়ামের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণ পর বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন।
তারাও শুধু দোয়া অনুষ্ঠান করার কথা জানান। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সবাই ভালোবাসি, বঙ্গবন্ধু সবার। এ জন্য ছাত্রলীগের ব্যানার কেন ব্যবহার করতে হবে?
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই সূত্র ধরে ছাত্রলীগের এই কর্মসূচির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।