শাবিপ্রবি ছাত্র বুলবুল হত্যাকাণ্ডে বান্ধবীর সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ
দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার বান্ধবী মারজিয়া আক্তার উর্মির কোন সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ। বুধবার (২৭ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ।
তিনি বলেন, বুলবুলের বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাদ করার পর সে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বুলবুল আহমেদকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ছুরিকাঘাত করেছিলেন কামরুল আহমেদ (২৯)। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া অপর দু’জন হলেন- আবুল হোসেন (১৯) ও মো. হাসান (১৯)। তারা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছেন।
ঘটনায় অন্যকেউ জড়িত আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আটতকৃত ৩ জনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে তাদের ফোন কল চেক করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্য কেউ সম্পৃক্ত আছে কি জানা যায়নি। ঘটনাটি বিস্তর তদন্ত চলছে। পরে কারো সম্পৃক্ততার সন্ধান পেলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
বুলবুলের বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুলবুলের বান্ধবীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি তার তার সঙ্গে বুলবুলের সম্পর্ক ছিল, তারা সেখানে ঘুরতে যায়। সেখানে তাদের একা পেয়ে বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। পরে তার রক্ত দেখে তারা শুধুমাত্র মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে তার মানিব্যাগ ও বান্ধবীর মোবাইল নেয়নি। বান্ধবীর মোবাইলেও এমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
বুলবুলের বান্ধবী কল লিস্ট কেন ডিলিট করেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বান্ধবীর কাছে শুনেছে বুলবুলের লাশ বিকেলে ক্যাম্পাসে আনা হবে। তাই তার শেষ চেহেরাটা দেখার জন্য সে কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। তবে পরে ক্যাম্পাস থেকে তাকে আটক করা হয়।
এদিকে বুলবুল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে ও ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লাখ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহদেম জানান, বুলবুলের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পবিরারের সঙ্গে সবসময় থাকবে। এছাড়া বুলবুলের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো।
সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এক বান্ধবীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত গাজী কালুর টিলায় ঘুরতে যায় শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় (২০১৮-১৯ সেশন) বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল। পরে সেখানে অবস্থানকালীন সময়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে বুলবুল মাটিতে লুটে পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।