২৭ জুলাই ২০২২, ১৮:৫০

‘ত্রিভুজ প্রেম’র কারণে বুলবুলকে হত্যা— বলছেন মা

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা   © সংগৃহীত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ হত্যায় নতুন তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশ বুলবুলের প্রেমিকা মার্জিয়ার কোন সম্পৃক্ততায় পায়নি বলেও জানালেও নিহত শিক্ষার্থীর মা বলছেন ভিন্ন কথা।

বুলবুলের মা গণমাধ্যমের দাবি করেছেন, মূলত ত্রিভুজ প্রেমের কারণে বুলবুলকে হত্যা করা হয়েছে।

বুলবুলের মা ইয়াসমিন মঙ্গলবার দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যমে জানান, ‘আমরা মা-ছেলে বন্ধুর মতো ছিলাম। তাই সে সবকিছু আমাকে বলত, কিছুই লুকাত না। গত ঈদে বাড়িতে এসে আমাকে বলে, নেত্রকোনা থেকে দুই ছেলে-মেয়ে এসে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে। ছেলেটি খুব পছন্দ করে মেয়েটিকে। কিন্তু মেয়েটি ওই ছেলেকে পছন্দ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েটি বুলবুলকে পছন্দ করে, কিন্তু তার (বুলবুল) তো আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক। বুলবুল মেয়েটিকে বিষয়টি বারবার বোঝাতে চাইলেও মেয়েটি বুঝতে চাইত না। আমার ধারণা, মেয়েটির পছন্দের সেই ছেলে বুলবুলকে মেনে নিতে না পারায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে।’

এদিকে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার বেলা সোয়া এগারোটায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ।

তারা হলেন- কামরুল ইসলাম, আবুল হোসেন ও হাসান। কামরুলের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং কামরুলের বাসা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও বুলবুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে আজবাহার আলী শেখ জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা পর্যন্ত তদন্তে আমরা যতদূর জেনেছি এটি একটি পরিপূর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা। বিকেল ৪টা থেকে, সাড়ে ৪টার দিকে ২জন সেখান থেকে চলে যায় কথা বলতে বলতে। বাকি ২জন টিলায় অবস্থান করছিল। সন্ধ্যার পরে কামরুল আসেন। বুলবুল ও মার্জিয়াকে একাকী পেয়ে তাদের কাছে মোবাইল ও মানিব্যাগ দাবি করেন।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ছিনতাই করার সময় বুলবুলের সাথে ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। বুলবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এর চিহ্ন রয়েছে। ব্যাপক ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঘটনার অন্যতম হোতা কামরুল তারা হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বুলবুলকে আঘাত করেন। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থলে থাকা তিনজন তিন দিকে পালিয়ে যায়।’

মার্জিয়ার ফোন নেয়নি কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজবাহার আলী জানান, ‘মার্জিয়া কিছুটা দূরে ছিল তাই তার কাছ থেকে ফোন নেয়নি। বুলবুলের মানিব্যাগও নেয়নি। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে যখন ছুরিকাঘাত করেছে তখন রক্ত বের হতে দেখে ছিটকে তিনজন তিনদিকে চলে গেছে।’

মার্জিয়ার কললিস্ট মুছে ফেলা, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পুলিশ বলেন, ‘মার্জিয়ার কললিস্ট এবং মোবাইল আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। তার কললিস্টের সাথে ছিনতাইকারীদের কললিস্টে কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বা ক্রিমিনাল কন্সপিরেসির মতো কোনো তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায়নি।’