বুলবুলকে খুন করে ‘তিনজন’, ‘কল লিস্ট’ মুছে ফেলেছেন প্রেমিকা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিকার রহস্যজনক আচরণে প্রশ্ন উঠেছে। তার প্রেমিকাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেছে পুলিশের একটি দল। তারা সেই রাতে কি হয়েছিল সেটি জানার চেষ্টা করছে।
পরিদর্শন শেষে খুনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক আমিনা পারভীন মঙ্গলবার রাতে বলেন, ওই ছাত্রী (বুলবুলের প্রেমিকা) জানিয়েছেন, তিনজন মাস্ক পরা লোক এসে বুলবুলকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে।
ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে থাকা এবং তার সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাওয়া তদন্ত কমিটির এ সদস্য আরও জানান, ওই ছাত্রী তার মোবাইল ফোনের কল লিস্টও মুছে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন: গতকালই নতুন জুতা কেনার টাকা চেয়েছিল বুলবুল: মা
রাতের ঘটনার বর্ণণা দিয়ে ওই ছাত্রী জানান, বুলবুল আর সে ঘটনাস্থলে বসেছিলেন। হঠাৎ করে ওই স্থানে তিনজন লোক আসেন। তাদের সবার মাস্ক পরা ছিল। তারা এসে বুলবুলকে একটু দূরে সরে নিয়ে যায়। এ সময় ওই ছাত্রী অন্যদিকে তাকিয়ে কাউকে ডাকতে চেষ্টা করছিলেন। তারপর বুলবুলের দিকে তাকালে দেখেন, বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করে অজ্ঞাতনামারা চলে যাচ্ছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীকালুর টিলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার প্রেমিকা শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুলবুলের প্রেমিকা সর্বপ্রথম বুলবুলকে হাসপাতালে নিতে সহযোগিতা চান। ঘটনার পর দুই জায়গায় দুই রকম বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। প্রথমে ওই ছাত্রী ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানালেও পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনাস্থলে বুলবুলের সাথে থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাবিপ্রবির চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, বুলবুলকে উদ্ধারের পর তার লাশ প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান ওই ছাত্রী।
জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শাবিপ্রবি ছাত্র নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে বুলবুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার আচরণ আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেছা হল সংলগ্ন গাজীকালুর টিলায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের হাতে শিক্ষার্থী বুলবুল ছুরিকাহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার ও পরে উন্নত চিকিৎসার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।