অপরাধী শনাক্ত বিষয়ক দু’টি ল্যাব হবে: মাভাবিপ্রবি উপাচার্য
অপরাধশনাক্তকরণ বিষয়ক বায়োলজিক্যাল ও সাইবার ক্রাইম সম্পর্কিত দুটি আধুনিক ল্যাব স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ফরহাদ হোসেন।
মাভাবিপ্রবির ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স (সিপিএস) বিভাগের উদ্যোগে মাভাবিপ্রবি, ঢাবি ও চবির সমন্বয়ে দিনব্যাপী ক্রাইম, ভিক্টিমস এন্ড জাস্টিস বিষয়ে জাতীয় সেমিনার ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সক্রেটিসকে হত্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি সমাজের ক্ষমতাশালীদের উদ্দেশ্যে জাস্টিস বিষয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন। সেই কুচক্র মহল এখনও রয়েছে। অপরাধবিজ্ঞানের জ্ঞান অন্বেষণ দেশ ও সমাজের জন্য প্রয়োজন। কারা কিভাবে ক্রাইম করে সেটি নিয়ে গবেষণা করে এই ক্রাইমের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে।' শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দায় দায়িত্ব সঠিক বিষয়ে পালন না হলে সেটাও অপরাধের মধ্যে পড়ছে কিনা তা বিচার বিশ্লেষণ করতে বলেন এই বিভাগের উদ্দেশ্যে।' সেই সাথে নিজে শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় অপরাধ বিষয়ে পড়াশোনা দেশে না থাকায় এ বিষয়ে জানার সুযোগ হয়নি। তাই এই বিভাগ থেকে অপরাধ বিষয়ে জানার কৌতূহল ব্যক্ত করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ১০টায় দিনব্যাপী এ সেমিনার ও ওয়ার্কশপ সিপিএস বিভাগের গ্যালারি রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মাভাবিপ্রবি ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক। অনুষ্ঠানের সভাপতি তার বক্তব্যে দেশে অপরাধবিজ্ঞান সম্পর্কিত জ্ঞান ও গবেষণা বৃদ্ধিতে এ বিভাগের কর্মকান্ড ও সাফল্য তুলে ধরেন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করতে এ ধরনের গবেষণার ক্ষেত্র ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।
এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ আর এম সোলাইমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুল হক।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজী এন্ড পুলিশ সায়েন্স(সিপিএস) বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ সাখাওয়াত হোসেন সহ আরো সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
সেমিনারে গবেষকরা ক্রাইম, ভিক্টিমস ও জাস্টিস বিষয়ে মোট ১৮ টি গবেষণাপত্র তুলে ধরেন। যেখানে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, নৃ-গোষ্ঠী মানুষদের ওপর সহিংসতা ও উচ্ছেদকরণ, পর্যটকদের ওপর সহিংসতা, শিশু ধর্ষণ, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ, মাদকাসক্তি ও চিকিৎসা, বনাঞ্চলীয় অপরাধ ও বিচারবিভাগীয় চ্যালেঞ্জ, আবহাওয়া সম্পর্কিত অপরাধ, পুলিশের চাঁদাবাজি, সাইবার পুলিশিং এর চ্যালেঞ্জ, ক্রাইম ম্যাপিং, মহিলা কয়েদিদের মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পুলিশিং ও রোহিঙ্গা ইস্যুর বিষয়গুলোকে তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরীক্ষালব্ধ মতামত তুলে ধরা হয়।
সর্বশেষে ৩টি সেশনের মাধ্যমে গবেষণাগুলো তুলে ধরার পর অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণায় শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই সাথে সেমিনার ও কর্মশালায় উপস্থিত গবেষক ও শিক্ষার্থীদের সনদপত্র প্রদান করা হয়।