বাস বাড়লেও কমেনি যাতায়াত নিয়ে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি
বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ভোগান্তি কমেনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের। এ বছরের শুরুতে হাবিপ্রবির পরিবহন পুলে যুক্ত হয় বিআরটিসি নতুন দুইটি দ্বিতল বাস। এতে বাসের সংখ্যা বাড়লেও কমেছে ট্রিপের সংখ্যা। শহর থেকে ক্যাম্পাস যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাসের সিট পাবার আশায় ১৫-২০ মিনিট আগে থেকে বাসের গেটে অপেক্ষা করছে শিক্ষার্থীরা। গরমে বাসের মধ্যে উঠে বসে থাকছেন অনেকে। পিক আওয়ারে এমনও অবস্থা দেখা গেছে বাসে দাঁড়ানোর মতো জায়গাও পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। বাদুর ঝোলা হয়ে ক্লাস-পরীক্ষা দিতে আসছেন তারা।
দিনাজপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. দূরে এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে আবাসন সংকট থাকায় হলে থাকার সুযোগ পায় অর্ধেকের কম শিক্ষার্থী। বাকি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরের মেস, বাসাবাড়িতে অবস্থান করে। মেসভাড়া শহরের তুলনায় বেশি এবং টিউশন সুবিধার কারণে বাঁশেরহাটের চেয়ে শহরে থাকেন শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ। তাদের প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য নিরাপদ ও সময়সঞ্চয়ী পরিবহন ব্যবস্থা ক্যাম্পাসের বাস। এছাড়াও ক্যাম্পাসে ও আশেপাশে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রয়োজনে দিনাজপুর শহরে যাতায়াত করতে বাসের ওপরেই নির্ভর করতে হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিগত সময়ে অল্প সংখ্যক বাস নিয়েও ৩০ মিনিট পর পর বাসের ট্রিপ পরিচালনা করা গেলেও বর্তমানে বিআরটিসি বাস যুক্ত হওয়া সত্বেও তারা পর্যাপ্ত সুবিধা পাচ্ছেন না। প্রশাসনকে বাস সিডিউলের বিষয়ে বারবার অবগত করার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। সকল শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ৩০ মিনিট পরপর বাস ও প্রতি ট্রিপে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বাস বিষয়ে জানতে বাসে যাতায়াত করা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পূর্বের ন্যায় আধা ঘণ্টা পর পর বাস না থাকায় কোনো একটা বাস ছুটে গেলে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী বাসের জন্য। এছাড়াও ট্রিপে বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় দাঁড়ানোর মতো জায়গাও পাওয়া যায় না অধিকাংশ সময়। এতে করে সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে না পারা ও বাসে জায়গা না হওয়ায় অটোরিকশায় ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ভোগান্তি নিয়ে জানতে চাইলে পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খালিদ হোসেন বলেন, "শিক্ষার্থীদের এই সিডিউল সমস্যা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কিন্তু এই মুহূর্তে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর বাস দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের কিছু লোকবল সংকট রয়েছে,আগামী অর্গানোগ্রামে লোকবল নিতে পারলে আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো বলে মনে করি। তবে আমরা ট্রিপে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করছি।"
নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা বাসগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন বাস গুলো পরে থাকায় কয়েকটি বাসে ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা অর্থ সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় দ্রুত রিপেয়ার করা সম্ভব হচ্ছে না।"