গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সম্মানী নিয়ে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকদের অসন্তোষ
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে প্রদত্ত সম্মানীকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গতকাল রবিবার (১ মে) বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সম্মানীকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি পরবর্তী সময়ে সম্মানীর যৌক্তিক হার নির্ধারণ করবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: কামরুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক ড. আবু সালেহ সাক্ষরিত উক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষার কোর কমিটি এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ৪০% বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করা হবে। বাকি ৬০% শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মানী দেয়া হবে, যা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুসরণ করা হয়েছে।
আর গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ ৮ : ৫ : ৩ (পূর্বের প্রদেয় অনুপাতে ) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মানী দেয়া হবে (কোর কমিটির সদস্যবৃন্দ, ডীন, সভাপতি, প্রভোস্ট, প্রক্টর অফিস সম্মানীসহ )। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল সকল শিক্ষকবৃন্দের ২৯ হাজার টাকা ( ১০% ট্যাক্স বাদে ) করে সম্মানী হার নির্ধারিত হয়। কিন্তু, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ হতে প্রথমে ৪০% এবং পরে ৩০% প্রদানের জন্য অনুরোধ করে। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দল তার এ প্রস্তাবের সাথে দ্বিমত পোষণ করলে ওইদিনে আর আলোচনার অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে আরো বলা হয়, শিক্ষকদের অনেকেই ঈদের পূর্বেই প্রাপ্য সম্মানী প্রদানের অনুরোধ জানানোয় গত ২৭ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষার কোর কমিটি, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধিগণ আবারো আলোচনায় বসে। ওই আলোচনায় গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২৫%, ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ৪০% রেখে ঈদের পূর্বে সমাধান করা যায় কিনা তা নিয়ে মতামত দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মতামত জানতে চাইলে ঈদের পূর্বে সম্মানী প্রদান নিশ্চিতকরণ ও অল্প কিছু সম্মানী ব্যবধান হওয়ায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক দিক বিবেচনা করে অধিকাংশ প্রতিনিধি সদস্য ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ৪০% ও গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ হতে ২৫% বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করতে সম্মত হন কিন্তু শিক্ষক সমিতি গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ হতে ২৫% বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রদান করেনি।
“এ বিষয় সমিতি ২৮ এপ্রিল জরুীর সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, আসন্ন ঈদ এবং আমাদের সন্মানিত সহকর্মীদের আর্থিক প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে (গুচ্ছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ হতে ২৫% বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদানের আপত্তি বহাল রেখে ) ২৭ এপ্রিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সন্মানিত সহকর্মীদের নিজ নিজ হিসাবে সন্মানী পৌঁছে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষক সমিতি সকল শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে সম্মানির যৌক্তিক হার নির্ধারণে কাজ করবে এবং সাধারণ সভার আয়োজন করবে।”
শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি পরবর্তী সময়ে সম্মানির যৌক্তিক হার নির্ধারণ করা হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে , জিএসটি এবং ভর্তির সম্মানী বাবদ ২৬ হাজার টাকা শিক্ষকবৃন্দের স্ব স্ব অ্যাকাউন্ট নম্বরে জমা হয়েছে।
তবে জানা যায়, এ পরিমাণ অর্থ সাধারণ শিক্ষকদের মনে মিশ্র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, যা শিক্ষক সমিতিরও দৃষ্টিগোচরে এসেছে।
শিক্ষক সমিতি মনে করে, শিক্ষকবৃন্দের নিকট সঠিক তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সমিতির নৈতিক দ্বায়িত্ব। শিক্ষক সমিতি তার কার্যক্রমের সকল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুসরণ করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তার যে কোন ভিন্নমত, বিতর্ক ও বিরোধের মিমাংসা করে থাকে। সমিতি সব সময় যে কোন ভিন্নমতকে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করে ও স্বাগত জানায় এবং মত প্রকাশের অধিকারকে সংরক্ষন করে। সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভার মাধ্যমে শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি পরবর্তী সময়ে সম্মানির যৌক্তিক হার নির্ধারণে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।