‘ভিসি-প্রো-ভিসি-ট্রেজারার’ কিছুই নেই পাবিপ্রবিতে
‘ভিসি-প্রো-ভিসি-ট্রেজারার’ কিছুই নেই পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ শূণ্য থাকায় প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। শিক্ষার্থীদের সেশনজট সহ নানাবিধ সমস্যা তৈরী হয়েছে।
সর্বশেষ পাবিপ্রবি উপাচার্য ছিলেন প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী। গত ৬ মার্চ ২০২১ এ তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ায় উপাচার্য পদ শূন্য হয়। এক মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন কোন উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়নি। অনেকদিন শূণ্য আছে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদও। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রশাসনিক পদ শূণ্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজগুলো আটকে আছে অনেকদিন ধরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ৬ বছরের অধিক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর অর্নাস সম্পন্ন করলাম। কিন্তু ভিসি স্যার না থাকায় আমাদের সার্টিফিকেট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। বিভিন্ন চাকুরী পরীক্ষার সময় অতিক্রান্ত হলেও আমরা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছি না।
আরও পড়ুন: উপাচার্য পদে নিয়োগ পেয়েও কেন যোগ দেননি অধ্যাপক ফারুক
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, গত ২৭ মার্চ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছর পূর্ন করেছি কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমরা অনেকেই ৩য় বর্ষ সম্পন্ন করতে পারি নাই এবং অনেক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ১ম সেমিষ্টার পরীক্ষা সম্পন্ন হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিবিহীন এই অবস্থা এবং দীর্ঘ সেশনজটে দিন দিন আমরা দুশ্চিতাগ্রস্থ এবং হতাশ হয়ে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্রুত সচল করতে সরকারের দৃষ্টি কামনা করি।
পাবিপ্রবি রেজিস্টার বিজন কুমার ব্রক্ষ্ম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষক, কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ অনেককের বেতন আটকে পড়েছে। সামনে ঈদ আসছে। ঈদের আগে উপাচার্য নিয়োগ না হলে বেতন-বোনাসও দেয়া সম্ভব হবেনা। অনেকদিন ধরে প্রো-ভিসি, ট্রেজাররা পদ শূণ্য থাকায় প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ ও বিভিন্ন ই্যসুতে বিতর্কিত হন উপাচার্য এম রোস্তম আলী। তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনও করে শিক্ষার্থীরা। নিয়োগকে কেন্দ্র করে রিজেন্ট বোর্ডের সভা স্থগিত হওয়ার পর তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে স্থানীয় সাংসদের সমঝোতায় তিনি মুক্ত হন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযােগ তুলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে করা ওই অভিযােগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। তার বিদায়ের দিন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ঝাড়ু-জুতা মিছিল, থুতু নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছেন। সেদিন একপ্রকার লোকচক্ষুর অন্তরালেই বিদায় নেন তিনি।