বৃত্তির টাকা নিয়ে ভোগান্তিতে হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ১ হাজার ২০০ টাকা করে বৃত্তি প্রদান করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে টাকা না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৃত্তির টাকা প্রদান প্রক্রিয়া এতো বেশি সময় সাপেক্ষ যে অনেক শিক্ষার্থী স্নাতকের শেষবর্ষে এসেও প্রথম বর্ষের টাকা পাচ্ছে না।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কৃষি অনুষদ, মাৎসবিজ্ঞান অনুষদ, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স অনুষদ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের (টেকনিক্যাল বিষয়) সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাশ করলেই ১ হাজার ২০০ টাকা করে পান। এছাড়া বিজ্ঞান অনুষদ, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও সোশ্যাল সায়েন্স এন্ড হিউম্যানেটিজ অনুষদের শিক্ষার্থীদের শতকরা ২০ জন করে শিক্ষার্থী এই বৃত্তির টাকা পান।
প্রত্যেক সেমিস্টারের রেজাল্টের পর শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এক মাসের মধ্যে দেয়া হলেও হাবিপ্রবিতে সময় লাগে এক থেকে তিনবছর ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজ্ঞান অনুষদের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাইজুল ইসলাম বলেন, “যারা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসে তাদের কাছে এই টাকাটি অনেক বড় বিষয়। অথচ আমরা বহুবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও কোনো সমাধান হয়নি বিষয়টির। হলে গিয়ে খোঁজ নিলে হল প্রশাসন বলে আমাদের কাছে কন্ট্রোলার সেকসন থেকে রেজাল্টের কপি আসেনি আবার কন্ট্রোলার সেকসনে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন রেজাল্টের কপি হল প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাই মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদেরকেই রেজাল্টের কপি হল অফিসে পৌঁছে দিতে হয় । তারপর ফাইল তৈরি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি অফিসে ঘোরাঘুরি করে ব্যাংকে টাকা যায়। এতে করে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। যা সত্যিই দুঃখজনক।”
আবার কৃষি অনুষদের ২০১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ আনিসুর ইসলাম বলেন, “ তৃতীয় বর্ষ শেষ করে চতুর্থ বর্ষে উঠলেও এখনও প্রথম বর্ষের বৃত্তির টাকা পায় নি ।
শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে হাবিপ্রবির শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হল সুপার অধ্যাপক ড. মোঃ আবু সাঈদ বলেন, “ দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষার্থীরা এ বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসছে এবং আমরা উক্ত ব্যাপরে অবগত রয়েছি। বর্তমান উপাচার্য অনেক ভালো কাজ করছেন। আশা করি দ্রুতই উক্ত সমস্যার একটি সমাধান হয়ে যাবে। তবে অর্থ প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি যদি পরিবর্তন করা হয় তবে দ্রুতই শিক্ষার্থীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবে। কন্ট্রোলার সেকশন, একাডেমিক বৃত্তিশাখা ও হিসাব শাখা সমন্বয় করে কাজটি করলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে যাবে বলে মনে করি।”
অন্যদিকে হিসাব শাখার পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, “ করোনার কারণে সব কিছুতেই একটু সময় বেশি লেগে যাচ্ছে। তবে বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। বর্তমান উপচার্য শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করছেন। আশা করি অল্প সময়ের মাঝেই এ ব্যাপারে উপাচার্য উদ্যোগ নিবেন ।”
উল্লেখ্য যে, মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একাংশ বৃত্তির টাকা তোলার আগেই ক্যাম্পাস ছাড়েন চাকরির সন্ধানে। তবে বৃত্তির এই টাকাটি অনেক শিক্ষার্থীর কাছে আবেগের বিষয় বলে জানা যায়। উক্ত সমস্যা সমাধানে তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।