১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:০৬

ইমেরিটাস অধ্যাপক হতে চান না ড. জাফর ইকবাল দম্পতি

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হক  © সংগৃহীত ছবি

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ইমেরিটাস অধ্যাপক হতে চান না। আজ শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন। তিনি জানিয়েছেন, ইমেরিটাস অধ্যাপক হওয়ার ইচ্ছে নেই ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতির।

শাহরিয়ার বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবিতে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের অবদানের কথা ভেবে তাকে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দাবি করেছিলেন। তবে এ বিষয়ে স্যারের থেকে আগে থেকে মতামত না নেওয়ায় শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রীকে এ বিষয়ে কোনো দাবি জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আর বাড়ানো হবে না: শিক্ষামন্ত্রী

তিনি বলেন, ইমেরিটাস অধ্যাপকের বিষয়ে পরে স্যারকে জানানো হলে তিনিসহ অধ্যাপক ইয়াসমিন হক ম্যাম সবার প্রতি সম্মান রেখেই ইমেরিটাস অধ্যাপক হতে ইচ্ছুক নন বলে জানান।

এর আগে, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে চেয়েছিলেন শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সংঘর্ষ, মিছিল, বিক্ষোভ আর উত্তেজনায় ক্যাম্পাস উত্তাল ছিল ১৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। অনশন ভাঙার পর থেকে বদলে গেছে ক্যাম্পাসের চিত্র। কমেছে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। টানা ১৪ দিনের আন্দোলন-ঝড় শেষে শান্ত হয়েছে শাবিপ্রবি। তবে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ক্যাম্পাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আলপনা, ক্যাম্পাস পরিষ্কার, চাষাভুষার টং স্থাপন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা।

আরও পড়ুন: ঢাবির হল চলে ছাত্রলীগের ‘সংবিধানে’

অনশন ভাঙ্গার পর গুঞ্জন উঠেছিলো এক সপ্তাহের মধ্য প্রজ্ঞাপন জারি করে শাবিপ্রবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। শাবিপ্রবি থেকেই কোনো শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। বেশ কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও শুনা গিয়েছিলো। কিন্তু সপ্তাহ গড়ালেও উপাচার্যকে অপসারনের কোন উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। বরং বহাল তবিয়তে বাসা থেকেই অফিস করছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ।

এর আগে ১৩ জানুয়ারি রাতে সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রীরা। পরের দিন দাবি মেনে নেয়ার কথা দিলেও তা পূরণ করেননি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ। দাবি পূরণে সময় চাওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যায় ছাত্রীরা। পরে তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যুক্ত হন ছাত্ররাও। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা চালালে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। পরেরদিন ভিসিকে আইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তালা ভেঙে ভিসিকে উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর ভিসি পদত্যাগে সময় বেধে দিয়ে গণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা। ১৬৩ ঘণ্টা অনশন করার পর বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন তারা।