মেয়াদের শেষ সময়ে শতাধিক নিয়োগের চেষ্টা পাবিপ্রবি ভিসির
আগামী ৬ মার্চ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য এম রোস্তম আলীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। শেষ সময়ে এসে উপাচার্য ১০২ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এসব নিয়োগ চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। এদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবনা শহরের মানববন্ধন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের ৬০তম সভা সাজানোই হয়েছে নিয়োগ অনুমোদন আপগ্রেডেশন নিয়ে। ৬১টি আলোচ্যসূচির মধ্যে ৪২টি রয়েছে নিয়োগের অনুমোদনসংক্রান্ত।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের জীবন থমকে আছে, টিকা দিয়ে স্কুল খুলে দেয়ার আহ্বান
এসব নিয়োগের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। স্বজনপ্রীতি করে উপাচার্য এম রোস্তম আলী তার ভাতিজি কানিজ ফাতেমাকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি নিয়োগপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আগেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক হারুন-অর-রশিদ বলেন, উপাচার্য মো. রোস্তম আলীর মেয়াদকাল প্রায় শেষের দিকে। ফলে তিনি তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন বিভাগে প্রচুর নিয়োগপ্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিন মাস আগে গণিত বিভাগে প্রভাষকের দুটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। উপাচার্য নিজে এই নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি। শিক্ষক হারুন-অর-রশিদকে বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী থাকায় তিনি মৌখিকভাবে দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার কথা উপাচার্যকে বলেছেন। কিন্তু উপাচার্য তাঁকে দায়িত্বে রেখেই বৃহস্পতিবার নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করেন। তবে নিয়োগপ্রক্রিয়ার কোনো বিষয়ই তাঁকে জানাননি।
হারুন–অর–রশিদ বলেন, ২৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টার দিকে নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হলে তিনি উপাচার্যের কার্যালয়ে যান। তিনি উপাচর্যর সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। তবে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা তাকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেননি।
আরও পড়ুন: লাখ লাখ শিক্ষার্থীর অনার্স-মাস্টার্স সার্টিফিকেটের কি মূল্য আছে?
হারুন-অর–রশিদ অভিযোগ করেন, কর্মচারীদের উপেক্ষা করে তিনি দেখা করতে চাইলে উপাচার্যেরর নির্দেশে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তিনি উপায় না পেয়ে কার্যালয় থেকে চলে আসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ঠিক নয়। কোনো নিয়োগেই অনিয়ম হয়নি। অন্যদিকে রিজেন্ট বোর্ডে কিছু নিয়োগ অনুমোদনের অ্যাজেন্ডা আছে, তবে সেটা ১০২ জন নয়, খুব বেশি হলে ২৫ জন হবে হয়তো।
উপাচার্য এম রোস্তম আলীর নাম্বারে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।