আমরণ অনশন চলছে, আরেক শিক্ষার্থী হাসপাতালে
ভিসির পদত্যাগের দাবিতে এখনো অনড় রয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে আরো এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে ২৪ অনশনকারীর ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকি ৮ শিক্ষার্থী ভিসির বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আজ শনিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে অনশনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার আবেদীন অসুস্থ হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বাকী ৮ জন এখনো অনশন করছেন। তাদের শরীরে স্যালাইন পুশ করেছেন চিকিৎসকরা। ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ২৪ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিনই বাড়ি চলে যান।
অনশন করা অবস্থায় শিক্ষার্থী মরিয়ম রুবির নানা মারা যাওয়ার খবর আসে। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন রুবি। তবে তিনি অনশন ভাঙেননি। ভিসির পদত্যাগের আগ পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীকে গতকাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠান। শিক্ষামন্ত্রী মুঠোফোনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ করে তাদের একটি প্রতিনিধিদলকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, অনশনকারীদের অসুস্থ রেখে তারা ঢাকায় যেতে পারবেন না। তারা ভার্চুয়ালি বসে বা শিক্ষামন্ত্রী সিলেটে এলে বসে আলোচনায় আগ্রহী।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে দেখা করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছেন। শুক্রবার মধ্যরাতে বিমানযোগে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন। শাবিপ্রবি শিক্ষক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ তথ্য জানিয়েছেন। আজ শনিবার তারা শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি জানান তারা।
এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫ বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, উপাচার্য, শিক্ষকনেতা, রাজনৈতিক নেতা আর ছাত্রনেতাদের দাবা খেলার সময় এখন নয়। আমাদের সন্তানেরা উন্মুক্ত আকাশের নিচে অনশন করছে। তাদের উন্মুক্ত আকাশের নিচে অভুক্ত রেখে আমরা সুখনিদ্রায় যেতে পারি না।