‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতেও বিক্ষোভ-অনশন করছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। বুধবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কথা বলতে গেলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই পর্যন্ত আপনাদের কাছে আমাদের একটাই কথা; যে আমাদের দাবির সঙ্গে আপনারা একমত কি না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের কথায় কোনো উত্তর দেননি।
এসময় কোষাধ্যক্ষ কিছু একটা বলতে গেলে শিক্ষার্থীরা ‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান’, ‘যেই ভিসি গুলি মারে সেই ভিসি চাই না’ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষকরা রাত ১২টার দিকে ফিরে যান।
এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশোভন মন্তব্যের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের সামনে প্রতিবাদ জানান। এসময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষক। আমরা সম্মান টুকুর জন্য কাজ করি এবং সম্মানের জন্যই শিক্ষকতা পেশায় এসেছি। আমরা বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ধারণ (Belong) করি, আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে আমাদের যা খুশি তাই বলবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। সেই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা ২০২২ সালে এসে কেন আমরা এই অপমানের শিকার হবো। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তার এই বক্তব্য সমকালে প্রকাশের পরে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা এবং নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এই মন্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে বিভিন্ন সময় ‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান’ বলে স্লোগান দেন।
এদিকে তার এই বক্তব্যে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাসের উদ্দিন ফেসবুকে লিখেন, আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের টাকায় পড়াশোনা করেছেন, সে টাকা কিন্তু এই চাষা-ভূষার ঘামের টাকা। যে খাবারটা খেয়ে এখানে কথা বলতে এসেছেন সে খাবারটাও কিন্তু চাষা-ভুষারাই উৎপাদন করেছে। এদেশ চাষা-ভুষাদের। আপনি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে এমন মানহানিকর কথা বলার আগে কি একবারও ভাবলেন না? এমন মানহানিকর কথা বলার জন্য সারাদেশের চাষা-ভুষাদের কাছে দ্রুত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময়ে বেধে দিয়েছিলেন। দাবি না মানলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।