অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শাবি, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগামীকাল রবিবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দিনভর বিক্ষোভ-সংঘর্ষের পর আজ রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ ঘোষণা দেন।
শাবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে আজকে আমাদের একটা মিটিং হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে... আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার এ চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছি।
আরও পড়ুন: উত্তাল শাবি ক্যাম্পাস, অবরুদ্ধ ভিসি
তিনি আরও বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা কঠিন। সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার এখন আর সে পরিবেশ নেই। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: শাবিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী মুখোমুখি (ভিডিও)
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা চাই, চলমান এ পরিস্থিতিতে সবাই নিরাপদে থাকুক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে গণমাধ্যমে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম আবার নতুন করে শুরু করবো। এই মুহূর্তে সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাবিতে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের গুলি-টিয়ার শেল
এর আগে, এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: রণক্ষেত্র শাবি, তালা ভেঙে ভিসিকে উদ্ধার করল পুলিশ
ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিষয়টিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও আহত হয়েছেন। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাও আহত হয়েছেন। এ উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে কে বা কারা গুলিও করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। পুলিশ ১০ জন গুলিবিদ্ধ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা কোনভাবে গ্রহণযোগ্য না। ছোট্ট একটা ব্যাপার নিয়ে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।
এদিন বিকেলে তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন। এর জেরে ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করেন।
তখন শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে কিছু সময়ের জন্য পুলিশ পিছু হটলেও একটু পরই সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর পুলিশ আইআইসিটি ভবনে প্রবেশ করে উপাচার্যকে উদ্ধার করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়।