শাবি ছাত্রীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার পরেও ছাত্রীদের ফের সংঘঠিত হয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দিনেও চলছে ছাত্রীদের আন্দোলন, রাতের মধ্যে নতুন কর্মসূচি
এ সময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আলম কবীর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহির উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, এদিন বিকাল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে দাবি মেনে নিতে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের অপেক্ষা ছিলেন ছাত্রীরা। ছাত্রীদের অবস্থান নেওয়ায় গোল চত্বরের রাস্তায় সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবীর আন্দোলনরত ছাত্রীদের গোল চত্বর থেকে উঠে যেতে বলেন। তখন ছাত্রীরা দাবি না মানলে তারা উঠবে না বললে জানান।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট জোবেদা
এরপর ছাত্রীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মৃণ্ময় দাস ঝুটন, বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান, আশরাফ কামাল আরিফ, সজীবুর রহমান, মাহবুবুর রহমানের অনুসারী, রিশান তন্ময়, রিশাদ ঠাকুর, ফরেস্ট্রি বিভাগের মো. সাজ্জাদ হোসেন, ইংরেজি বিভাগের রিশাদ ঠাকুর, বাংলা বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সুমন মিয়া, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শফিউল হক রাব্বি আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন।
আন্দোলনরত সাদিয়া ইসলাম নামে এক ছাত্রী বলেন, গোল চত্বরের এদিক দিয়ে প্রথমে একটা অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকে পথ করে দেই। পরবর্তীতে আরেকটা অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকেও পথ করে দেই। এসব অ্যাম্বুলেন্সের পেছন পেছন এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলরত ছাত্রীদের মাঝে ঢুকে পড়ে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এসময় তারা কয়েকজন ছাত্রীকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা ১০-১২ জন ছাত্রকে তারা বেধড়ক মারধর করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ছাত্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে, দাবি মেনে নিতে ছাত্রীরা আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেও বিকাল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে পুনরায় অবস্থান নিয়েছিলেন তারা। ছাত্রীদের বেঁধে দেয়ার সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে।
বিশ্বিবদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপাচার্য ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবু পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে আন্দোলন করছে। আমরা তাদের হলে ফিরে যেতে বলেছি। হামলা বা বাধা দেইনি।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, শুক্রবারই উপাচার্য স্যার ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি কিছু সময় চেয়েছেন। এখন তাদের আন্দোলনে নামা অযৌক্তিক। ছাত্রীদের হলে ফিরে যেতে বলেছি।