বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিলো একটি বড় অনুপ্রেরণা: ডুয়েট ভিসি
যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উদ্যাপিত হয়েছে। আজ সোমবার (১০ জানুয়ারি) সকালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থিত তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
এরপর পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, ছাত্র সংগঠন, অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি ও ডুয়েট ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এর আগে সূর্যোদয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, লাইব্রেরি ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই প্রত্যাবর্তন ছিলো সদ্য স্বাধীন বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বেশি আবেগঘন ঘটনা এবং একটি বড় অনুপ্রেরণা। এই দিনে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা শুরু করি।
তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলা গড়ে তোলাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। তাঁর স্বপ্নগুলোর মধ্যে অন্যতম দুটি স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশ স্বাধীন করা এবং দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাঁর প্রথম স্বপ্ন তিনি পূরণ করেছেন। আরেকটি স্বপ্ন দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় স্বল্প সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন, শরণার্থী পুনর্বাসন, অর্থনৈতিক পুনর্বাসন ও দেশ গঠন, প্রশাসনিক সংস্কার, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, বিদ্যুৎ, রাস্তা, রেলসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন, কৃষি ও সমবায়, শিল্প ও বহিঃবাণিজ্য, নারী উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের স্বীকৃতি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জল ও স্থল সম্পদ রক্ষায় নীতিমালা, আইনের শাসন ও দূর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন ইত্যাদি-সবক্ষেত্রে যথোপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
“বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সারথী হয়ে তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা রক্তেভেজা সেই পতাকা হাতে নিয়ে নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে উন্নত দেশ লক্ষ্যে আজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। এছাড়া তিনি ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ তাঁদের পরিবারের শাহাদত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।”
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য সবাইকে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, রেজিস্ট্রার (অ. দা.), অফিস প্রধান এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদ যোহর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আত্মার শান্তি কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা এবং বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঘটনাবহুল জীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।