বশেমুরবিপ্রবিসাসের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের সমাপনী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (বশেমুরবিপ্রবিসাস) উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল ৯টা থেকে আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা আলোকচিত্র ঘুরে দেখেন।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে প্রায় দুই শতাধিক আলোকচিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পরিস্থিতি, গণহত্যা, গেরিলা যুদ্ধ, নারীদের আত্মত্যাগ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সংবাদপত্রের ভূমিকা, মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম, জাতীয় চার নেতা ও বীরশ্রেষ্ঠদের অবদানসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজনের ব্যাপারে বশেমুরবিপ্রবিসাসের সভাপতি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সমাপনী উদযাপন উপলক্ষে তরুণ প্রজন্মের নিকট সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার অংশ হিসেবে আমরা এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমরা স্বল্পসময়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস জানানো এবং নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে যারা আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ সকলের সামনে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আশা করি শিক্ষার্থীরা ইতিহাস জানতে অনুপ্রাণিত হবে।
বশেমুরবিপ্রবিসাসের সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন পরান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনী শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের সামনে তুলে ধরতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধিকে আরও সমৃদ্ধ করা ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে উদ্ভুদ্ধ করা। এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিজেদের মধ্যে ধারণ করে প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে সহায়তা করবে এটাই প্রত্যাশা।
আলোকচিত্র প্রদর্শনের পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. আবু সালেহ্ বলেন, একটি ক্যানভাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রায় সকল ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কীভাবে জন্ম হয়েছিল, সেই ঘটনা প্রবাহ আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি। বলা হয় যে, একটি ছবি অনেক বেশি কিছু বলে যায়, একটি ছবি একটি ইতিহাস। সেই জায়গা থেকে আমি সাংবাদিক সমিতির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে কিন্তু আন্তরিকতার কমতি ছিল না এই আয়োজন থেকেই বোঝা যায়।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মো: রোকনুজ্জামান বলেন, আয়োজনটি অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের কয়েকটি দুর্লভ চিত্র-ই এখানে দেখা গেছে। আমি প্রত্যাশা করি সাংবাদিক সমিতির তাদের এই ধারা অব্যাহত রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, আয়োজনটি অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। ভবিষ্যতে সাংবাদিক সমিতির নিকট থেকে এমন তথ্যবহুল আয়োজন প্রত্যাশা করি। আশা করি তাদের উপস্থাপনা আরও সৃজনশীল হবে।
উপাচার্য ড. একিউএম মাহাবুব বলেন, আয়োজনটি সুন্দর হয়েছে। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনাবলি আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। আমি প্রত্যাশা করছি সাংবাদিক সমিতির এই আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবনী নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি।