বাবা-মায়ের অজান্তেই ২৫ মেধাবী ছাত্র খুনি হয়ে ওঠে: আজহারী
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত সাহাসহ আরও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জনপ্রিয় ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে আজহারী লিখেছেন, মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যথাযথ শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ ও সঠিক পরিচর্যা পেলে মানুষ মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। জনসংখ্যা হয় জনশক্তি। রুপান্তরিত হয় মানব সম্পদে। আর যথাযথ শিক্ষা ও পরিচর্যার অভাবে এই মানুষগুলোই হয়ে ওঠে সমাজের বোঝা, উশৃঙ্খল, দুরাচারী, হিংস্র, এবং পাশবিক প্রকৃতির।
তিনি আরও লিখেছেন, নতুন আঙ্গিকে ইসলামের ছোঁয়া পেয়ে আজ বাংলাদেশে অনেক তরুণ-তরুণী সময়মতো সালাত আদায় করে, হারাম রিলেশনশিপ বাদ দিয়ে বৈধ বিয়ের পথ খুঁজে, উদ্যোক্তা হয়ে হালাল উপার্জনের চেষ্টা করে এবং সুন্দর সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখে। আর এই ছেলেগুলোই হেরার আলোর এ জ্যোতির্ময় ছোঁয়া না পেলে হয়তো— কিশোর গ্যাং তৈরী, চাঁদাবাজি, মাস্তানি, ইভটিজিং ইত্যাদি করে বেড়াতো। তারমানে, আদতে কোন মানুষই খারাপ নয়। দরকার যথাযথ পরিচর্যা ও দিকনির্দেশণার।
‘‘যেমন ধরুন, আবরার ফাহাদ যেমন মেধাবী ছাত্র ছিল, তেমনিভাবে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ২৫ জন আসামিও আবরারের মতই মেধাবী ছিল। এতো মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের অভাবে, তাদের মতোই আরেকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করতে তাদের বুক কাঁপেনি। তাদের বাবামায়েরা হয়তো কখনো বুঝতেই পারেনি যে তাদের সন্তান এরকম একজন খুনী সত্তা হয়ে বেড়ে উঠছে।’’
তরুণ-তরুণীদের প্রতি সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনসংখ্যাকে মানব সম্পদে রুপান্তর করতে, অভিবাবক, শিক্ষকমণ্ডলী এবং সরকার— সবাইকে নতুন করে ভাবতে হবে। দেশে প্রায় ৩ কোটি তরুণ-তরুণী। মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত করতে না পারলে, যতো শিক্ষিতই হোক না কেন, তরুণ প্রজন্ম এভাবে নানা বিধ্বংসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়বে। নষ্ট করবে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। বারবার পিছিয়ে পড়বে আগামীর বাংলাদেশ।