কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ‘জোর করে ছাত্ররা তাকে অফিসে নিয়ে যায়’

অধ্যাপক সেলিম হোসেন
অধ্যাপক সেলিম হোসেন  © ফাইল ছবি

‘ক্লাস শেষে বের হওয়ার পর কিছু ছাত্র এসে সেলিম হোসেনকে সালাম দিল। সালাম দেওয়ার ভঙ্গিটাই অস্বাভাবিক ছিল। একজন ছাত্র কখনও একজন শিক্ষককে ওইভাবে সালাম দেয় না। ওদের ভঙ্গিটা আমার পছন্দ হয়নি। ওরা বললো, স্যার আমাদের কিছু কথা আছে। তখন ড. সেলিম বলেছিলেন, যেহেতু হলের বিষয়ে কথা, সন্ধ্যায় হলের অফিসে আসো। তখন তারা বলল- না, স্যার। আমরা সবাই এসেছি, এখনই বলতে হবে। তখন সেলিম হোসেন বলেন, তাহলে এখানেই বলো। তখন ওই ছাত্ররা সেলিম হোসেনকে বলল, এখানে বলা যাবে না, আপনার অফিসে চলেন। সেলিম হোসেনের অনিচ্ছায় অনেকটা জোর করে ওই ছাত্ররা তাকে অফিসে নিয়ে যায়।’

এভাবেই ওই দিনের বর্ণনা দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সহকারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন। ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্চনার আগে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের সাথেই ছিলেন তিনি।

অধ্যাপক আলমগীর হোসেন জানান, এই কথাগুলো রাস্তায় আমার সামনেই হয়েছিল। এরপর আমি ব্যাংকে চলে যাই। ওরা সেলিম হোসেনকে নিয়ে তার অফিসে চলে যায়। ওদের অঙ্গভঙ্গি ভালো না থাকায় আমি ব্যাংক থেকে বের হয়ে সেলিমকে আবার ফোন দেই। তখন সব ঠিক আছে কিনা জানতে চাই। ওরা এখনও আছে কিনা জানতে চাইলে সেলিম হ্যাঁ সূচক জবাব দেন।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য ও সিসি টিভি ফুটেজের দৃশ্য অনুযায়ী মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা তাকে অপমান অপদস্ত করে। মানসিক নির্যাতনে হৃদরোগে মারা যাওয়া কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছাত্রলীগের নেতাদের বহিষ্কারসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে গতকাল ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ