ভর্তি পরীক্ষায় প্রশংসা কুড়িয়েছে চুয়েট ছাত্রলীগ
করোনা মহামারীর পর দেড় যুগ ব্যবধানে গতকাল শনিবার প্রকৌশলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) নিয়ে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৩২০১টি আসনের বিপরীতে এবারের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়েট কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। থেমে থাকেনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চুয়েট শাখার কার্যক্রমও।
প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় শাখার পাঠাগার সম্পাদক, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শাখার সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকেরের নির্দেশে দূর-দূরান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে চুয়েট ছাত্রলীগ গ্রহন করেছিলো নানান পদক্ষেপ।
চুয়েট ছাত্রলীগের কার্যকলাপ ও বহুমাত্রিক পদক্ষেপ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্ট- নতুন রেলস্টেশন, জিইসি, বহদ্দারহাট মোড়, রাস্তার মাথা, অক্সিজেন মোড় এলাকায় সহায়তা বুথ স্থাপন করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় আগত পরীক্ষার্থীদের যেকোনো প্রকার সমস্যার সমাধান দিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। এছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
এছাড়া বাস মালিকদের সাথে আলোচনা করে নির্ধারিত ভাড়া ঠিক করে পরীক্ষার্থীদের আনা নেয়ার ব্যবস্থাও করে চুয়েট ছাত্রলীগ। চুয়েট ক্যাম্পাসে অভিভাবকদের পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে সুপেয় খাবার পানির বোতল, মাস্ক ও লেখার কলম।
এমন বহুমুখী উদ্যোগ ও কার্যকলাপে খুশি ভর্তি পরীক্ষায় আগত পরীক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকবৃন্দ। প্রশংসা করেছেন ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবকদের।
লক্ষ্মীপুর থেকে আগত ভর্তি পরীক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, ‘আমি এখানে নামার পর বুঝেতেছিলাম না কোনদিকে যাবো। চুয়েটের ভাইদের হেল্প ডেস্ক দেখে সেখানে যাই এবং তাদের সহায়তায় গাড়ি করে কাপ্তাই রাস্তার মাথা আসি। এখানে সিএনজি চালকরা ভাড়া বেশি নিতে পারেনি সহজেই আমি চুয়েট চলে আসি। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে ২৫০ টাকা বেশি খরচ হয়ছিলো।’
এদিকে ফেসবুকে শরিফুল ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, ‘পরীক্ষা আল্লাহর রহমতে হয়েছে মোটামুটি। জানি না টিকবো কিনা, তবে চুয়েটের ভাইদের আতিথিয়েতা মন ছুয়েছে। দোয়া করি ভাইয়ারা আপনারা যাতে এভাবে দেশের সেবায় নিয়োজিত হতে পারেন।’
তাসমিয়া ফারহাত লিখেছেন, ‘গতকাল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। ভোর ৫টায় গাড়ি থেকে নামতেই চুয়েটের ভাইয়ারা সাদরের সাথে আমাদের গ্রহণ করেন। ছেলেদের জন্য আলাদা এবং মেয়েদের জন্য আলাদা ফ্রেশ হওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। দিক নির্দেশনা যারা দিচ্ছিলেন, তাদেরকে বার বার জিজ্ঞাসা করলেও একদমই বিরক্ত হননি। সুন্দর করে প্রত্যেকবার বুঝিয়ে দিয়েছেন।’
এছাড়া অভিভাভকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একজন অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এমন আতিথেয়তায় আমরা অভিভূত। যেকোনো সমস্যা তারা মুহূর্তেই সমাধান করে দিচ্ছেন।’
চুয়েট ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থী মর্মে আরও জানা যায়, নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে চুয়েট পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া ৩০ টাকা থাকলেও সিএনজি চালকরা অনেক সময় ভাড়া বেশি কখনো ৩০০ আবার কখনো ৫০০ চেয়ে বসেন।এই সমস্যার সমাধান করেছেন চুয়েট ছাত্রলীগ। সিএনজি চালকদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে মধ্যম পরিমানে ৪০ টাকা ভাড়া নির্ধারন করা হয়। পরীক্ষার আগে এবং চলাকালীন সময়ে চুয়েট ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিনামুল্যে বিতরণ হয় প্রায় ৩০০০ পিস সুপেয় খাবার পানির বোতল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতনতা তৈরির জন্য বিতরণ করা হয় ফেস মাস্ক এবং পরীক্ষার্থীদের মাঝে দেয়া হয় কলম।
ছাত্রলীগের হেল্প-ডেস্ক কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে চুয়েট ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ইফফাক হক নিশান বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে, ছাত্রসমাজের নানান সমস্যার সমাধান, সমাজের নিম্ন থেকে উচু পর্যায়ে সেবা দিয়ে থাকে। ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের প্রায় ৬০-৭০ জন সেচ্ছাসেবক কাজ করেছেন। তারা গত দুই দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর দুরান্ত থেকে আগত ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকদের নানান সমস্যার সমাধান দিয়ে তাদের পাশে থেকে চুয়েট ছাত্রলীগ। শুধু ভর্তি পরীক্ষা না, দেশের মানুষের সংকটাপন্ন পরিস্থিতি থেকে শুরু করে তৃনমুল পর্যায়ে হাসি ফোটানোর মাধ্যমে একটি সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়েই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। চুয়েট ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে আছে, থাকবে।’