সায়েন্স প্রোগ্রামে জাপানি বিশ্ববিদ্যালয় ও বুটেক্সের শিক্ষার্থীদের একত্রে অংশগ্রহণ
জাপানের ওসাকা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সাথে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) "জেএসটি সাকুরা সায়েন্স প্রোগ্রাম” অনুষ্ঠিত হয়েছে। গেলো ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ দিনব্যপী বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েট প্রসেস ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ ও জাপানের ওসাকা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এই সাকুরা প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
জাপানের অত্যন্ত সমাদৃত এই আয়োজনে বুটেক্স এবং ওআইটি থেকে ১২ জন করে মোট ২৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। দুই দেশর ২ জন করে নিয়ে ৪ জনের মোট ৬টি দল গঠন করা হয়।
প্রতিবছর মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের শুরু এই দুই সপ্তাহ গোলাপী ফুলে ছেঁয়ে যায় জাপান। এই চেরি ব্লসম মূলত জাপানে সাকুরা নামে পরিচিত। ২০১৪ সাল থেকে “জাপান সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এজেন্সি” এই সাকুরার নামে নামকরণ করে শুরু করে ''সাকুরা সায়েন্স পোগ্রাম''। এই প্রোগ্রামের মূল আকর্ষণ দেশ বিদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংমিশ্রণ এবং নিজেদের একইরকম সমস্যার সমাধানে কাজ করা। এই প্রোগ্রামটা সাজানো হয়েছে অন্যান্য দেশের তরুণ মেধাবীদের জাপানে আমন্ত্রণ জানানো ও একটি টেকসই পৃথিবী নিশ্চিত করার জন্য।
জাপানের অত্যন্ত সম্মানজনক এই আয়োজনের সাথে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে ড. কবির জানান, আমি ওসাকা ইনস্টিটিউট টেকনোলজির সাথে যোগাযোগ করি এবং বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করে জেএসটি সাকুরা পোগ্রাম নিশ্চিত করি। কোভিড-১৯ আমাদের জন্য বড় একটি সমস্যা ছিল। শুরু থেকেই পরিকল্পনা ছিলো জেএসটির অর্থায়নে আমাদের সম্পূর্ণ টিম জাপানে গিয়ে প্রোগ্রামটিতে অংশ নিবে। কিন্তু কোভিড ১৯ এর কারণে আমরা সরাসরি অংশ নিতে না পেরে আমি এবং প্রফেসর ওসামু শিমোমুরা আলোচনা করে ভার্চুয়ালি প্রোগামেটি বেশ ভালোভাবে সম্পন্ন করি। দশ দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের প্রথম দিন শুরু হয় সবার পরিচিতি পর্বের মধ্য দিয়ে। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয়দিন ওআইটি এবং বুটেক্স প্রফেসররা লেকচার দেন।
তারপর এক প্রোগামে প্লাস্টিকের কারণে দূষণ, টেক্সটাইল ওয়েস্টেজ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়েও আলোচনা হয়। চূড়ান্ত বিষয় হিসেবে প্রত্যেকের নিজ নিজ সেক্টরে কীভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধে কাজ করা যায় তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয় এবং প্রত্যেক দল থেকে প্রেজেন্টেশন তৈরী করে তা উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে দুই দেশের সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা এবং সনদ বিতরণ করা হয়। এই আয়োজনের অংশ হতে পেরে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া ওয়েট প্রসেস ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের লেকচারার ও এমএসসি শিক্ষার্থী মোতাকাব্বির হাসান তমাল বলেন, "এই আয়োজনে সবচেয়ে ভালো দিক ছিলো দুই দেশের কালচারাল বিনিময়,একে অপরের ভালো দিকগুলে জানতে পারা। বিশেষ করে জাপানিজদের সময়ানুবর্তিতা এবং কথার চেয়ে কাজে বিশ্বাসী হওয়ার বিষয়টি আমাকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে।“
অংশগ্রহণকারী আরেকজন নাঈম মাহমুদ বলেন, "সাকুরা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম আমাদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছে,আমরা নতুন অনেক কিছু জানতে পেরেছি।"
এই পোগ্রামের মাধ্যমে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। তাই খুব শীঘ্রই ওআইটি এবং বুটেক্সের মধ্যে মেমোরেন্ডাম অব অন্ডারস্ট্যান্ডিং তথা এমওইউ স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে।
এই প্রোগ্রামটির মূল আয়োজক ছিলেন, ওসাকা ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওসামু শিমোমুরা এবং মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক টমোআকি হাসিমোটো। সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শেখ মামুন কবির।