চার বছরেও হয়নি যবিপ্রবিতে হল ডাকাতির বিচার
চার বছরেও হয়নি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) হল ডাকাতির বিচার। ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবরে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের নেতৃত্বে হল ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেই ঘটনার বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের নেতৃত্বে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০০ ফোন, ১০০ ল্যাপটপ, নগদ অর্থসহ ডাকাতি করে নিয়ে যায় নিয়ে যায় তারা। হল ডাকাতির এ কালো অধ্যায়ের চার বছর পূর্ণ হলেও ডাকাতির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ আজও পায়নি।
মোমবাতি প্রজ্বলন ও প্রতিবাদ সমাবেশে নেতাকর্মীরা ওই রাতের ভয়াল ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার কথা তুলে ধরেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণসহ ঘটনার সাথে যুক্তদের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ফাহিম মোর্শেদ বলেন, ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর যবিপ্রবির ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের কষ্টে উপার্জিত মোবাইল, ল্যাপটপ ডাকাতি করা হয় এই দিনে যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক নজিরহীন ঘটনা। ২৫ মার্চের কালো রাতের মতো ভয়াবহ ঘটনা এই ৫ অক্টোবর যবিপ্রবির জন্য। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কেউ হতে পারে না। তাদের যথোপযুক্ত বিচার ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ অতি শীগ্রই করা হবে বলে দাবি জানান।
হল ডাকাতির বিচার ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা বিচার পায়নি কথাটা সঠিক নয়, ঐ সময়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পদক্ষেপগুলো নেওয়ার সক্ষমতা ছিল সেই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে। শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলাও করা হয়েছিলো তারপরও যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের ক্ষোভ থাকবেই।
ক্ষতি পূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ক্ষতি পূরণ কে দিবে? কারা ডাকাতদের পালন ও প্রশ্রয় দিচ্ছে সেটা যশোরের সকলেই জানে। সে ডাকাতদের কাছে গিয়ে তারা টাকাটা চায় না কেন? কারণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনতো ডাকাতি করে নাই।
তিনি আরও বলেন, এটা ঘটেছে ছাত্র রাজনীতির অন্তদ্বন্বের কারণে। আগে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে হল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে পরবর্তীতে ঐ গ্রুপ আবার হলের দখল নিতে চেয়েছে এবং কে কারা ডাকাতি করছে এটা শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে। যশোরের রাজনীতি ও ছাত্র রাজনীতির অন্তদ্বন্দের ফলে সংঘটিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো দোষ ছিলো না। তারপরেও বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসন হল দখলের মত জঘন্য ঘটনা কখনোই সমর্থন করে না। এই জন্য এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যা করণীয় ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা করেছে।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা জানি না। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা বলতে পারবেন এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা বলতে পারবেন। ছাত্র রাজনীতির অন্তদ্বন্দের ফলে ঘটনাগুলো বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আদৌ বিচারের মুখ দেখে কি না এ বিষয়ে আমার জানা নাই।
কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুস সাকিব, ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন, মঈন, মারুফ হোসাইন, আরিফ হোসাইন, গোলাম রাব্বী, আবির হোসেন রয়েল, বেলাল হোসেন, জয়দেব কুমারসহ শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।