বশেমুরবিপ্রবির অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে যা ভাবছে ডিনরা
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে সেশনজট এড়াতে অনলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের।
এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. সালেহ আহমেদ বলেন, আমাদের সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো সশরীরে পরীক্ষা নেয়া হবে। নতুনভাবে অনলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিতে হলে পুনরায় একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন হবে। তবে অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে এসকল বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. শাহজাহান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেখেছি। তবে আমরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায় প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীই অনুপস্থিত।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সমস্যা, ডিভাইস সংকটসহ বিভিন্ন কারণে এসকল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আর এই বৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করলে আমাদের পক্ষে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করা কঠিন। তাই আমি মনে করি যেহেতু শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের সশরীরে পরীক্ষার দিকেই আগানো উচিত।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মো. রোকনুজ্জামান বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সেশনজট এড়ানোর জন্য আমাদেরও দ্রুত পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাসে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ না করায় অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ করতে হলে আমাদের প্রথমে ক্লাসের বাইরে থাকা এসকল শিক্ষার্থীদের ক্লাসের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি অনলাইন পরীক্ষার জন্য একটি সিস্টেম ডেভলপ করাসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। এগুলো করা সম্ভব হলেই আমরা অনলাইন পরীক্ষার দিকে আগাতে পারি।
আইন অনুষদের ডিন ড. রাজিউর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তারা একদিকে যেমন কর্মজীবনে সঠিক সময়ে প্রবেশ করতে পারছেনা অপরদিকে ব্যক্তিজীবনেও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। তাই সেশনজট নিরসনে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
তিনি বলেন, সেশনজট নিরসনে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারে তবে আমাদের জন্যও বিষয়টা অসম্ভব নয়। হয়তো আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের এসকল সমস্যা সমাধান করেই অনলাইন পরীক্ষার দিকে আগানো উচিত।
কৃষি অনুষদের ডিন ড. মোজাহার আলী বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মনোভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পৃথক হয়। তাই এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া সবসময় সম্ভব হয় না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ল সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ. কিউ. এম মাহবুব বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি অনলাইন পরীক্ষা শুরু করে তাহলে আমাদেরও অনলাইন পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষার মান নিশ্চিত করার জন্য একটি উপযুক্ত পদ্ধতি প্রয়োজন হবে। রবিবার ডিন এবং চেয়ারম্যানদের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌছাবো।