৪ মাসেও মাস্টার্সের ফল দেয়নি নোবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৪ মাস পরও স্নাতকোত্তর ২০১৮-১৯ সেশনের ১ম সেমিস্টারের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ। ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়াতে নানান ধরনের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। ‍যদিও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ৪০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা ছিল। 

জানা যায়, ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারির শেষে এই চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সবগুলো কোর্স সম্পন্ন হওয়ার আগেই পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। বাকি থাকা তিন কোর্সের পরীক্ষা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত নোটিশ অনুযায়ী, এই ব্যাচের MBPG 1109, MBPG 1117 ও MBPG 1119 কোর্সের পরীক্ষা যথাক্রমে ২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, ৩ মার্চ ও ১১ মার্চ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নোটিশ অনুযায়ী, গত বছর ৩১ মার্চের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করার কথা থাকলেও কোভিড ১৯ পরিস্থিতির কারণে এতে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে তিন কোর্সের পরীক্ষা বাকি থাকতেই এই পরীক্ষা তখন স্থগিত করা হয় এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে এই পরীক্ষাসমূহ নেওয়া হয়।

এই পরীক্ষার পরবর্তী নোটিশ অনুযায়ী, সেমিস্টারের বাকি তিন কোর্স MBPG 1115, MBPG 1101 ও MBPG 1121 এর পরীক্ষা যথাক্রমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ৭, ১৪ এবং ২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এরপর পরীক্ষা শেষ হয়ে চার মাসের অধিক সময় পার হলেও এখনো ফলাফল প্রকাশ করেনি এই বিভাগ। জানা যায়, এর মাঝে একই বিভাগের অন্য আরেকটি ব্যাচের স্নাতক ২০১৫-১৬ বর্ষের ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নেয় বিভাগটি। এর ২ সাপ্তাহের মধ্যে তাদের ফলও প্রকাশ করেছে। জানুয়ারির ৭ তারিখে ওই ব্যাচের পরীক্ষা শেষ হলে মাস শেষ হওয়ার আগেই রেজাল্ট পেয়ে যায় তারা। এদিকে স্নাতকোত্তর ২০১৮-১৯ সেশনের পরীক্ষা শেষ হয়ে চার মাস গড়ালেও এখনো ফলাফল পায়নি তারা।

ফল প্রকাশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগের সদিচ্ছার অভাবেই তাদের ফল প্রকাশে কালক্ষেপণ হচ্ছে। এজন্য নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে তাদের। কেউ কেউ বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরিরত। মাস্টার্সের কোন রেজাল্ট দেখাতে না পারায় কোন পদোন্নয়ন পাচ্ছে না তারা। ফলে সময় ও অভিজ্ঞতা বাড়লেও চাকরি শুরু করেছেন যে পদবী দিয়ে সে পদেই চাকরি করতে হচ্ছে এখনো।

ফলপ্র কাশে কালক্ষেপণের বিষয়ে জানতে চাইলে এই ব্যাচের কোর্স কো-অর্ডিনেটর ও অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাবষক মাহিন রেজা বলেন, বিষয়টি পরীক্ষা কমিটি এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানের অধীনে। তিনিই ফল প্রকাশের ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। কোর্স কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে শুধুমাত্র কোর্সগুলো সঠিকভাবে শেষ করে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা।

পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে রেজাল্ট প্রকাশ করা যায়নি। লকডাউন উঠে গেলে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।

এ বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ৪০ দিনের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করার কথা। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে হয়ত দেরি হচ্ছে। এ দায়িত্ব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের। তারা এসব বিষয় মনিটরিং করেন।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের উপ-পরিচালক মো শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে এই পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও লকডাউনের কারণে সম্ভব হয়নি। লকডাউন উঠে গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই বিভাগের ফল প্রকাশ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ