পদোন্নতির দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির
আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত দাবি আদায় না হলে ৬ এপ্রিল থেকে সকল শিক্ষক একযােগে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান ও সম্পাদক ড.আবু সালেহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত ২২ মার্চ ১২৮ জন শিক্ষকের উপস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত এজেন্ডা-শিক্ষকদের প্রাপ্যতার তারিখ হতে প্রমােশন, শিক্ষা ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণ, পারিতোষিক হার যুগোপযোগীকরণ, খণ্ডকালীন শিক্ষকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বহিঃস্থ বিভাগে পাঠদানের জন্যে সম্মানী প্রদান, প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা, স্বতন্ত্র বাস সেবা চালুকরণ, শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক মেডিকেল সেবা প্রদান, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের জন্যে পদক্ষেপ গ্রহণ, প্লাজারিজম চেক করার জন্যে সফটওয়্যার ক্রয় করাসহ বিভিন্ন জার্নাল যেমন Elsevier, Sage, Springer, JSTOR এ গবেষণাপত্র/প্রবন্ধ পড়া এবং ডাউনলোড করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে চুক্তি করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব পরিচালনার জন্যে কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এসময় সভায় উপস্থিত শিক্ষকগণ প্রাপ্যতার তারিখ হতে পদোন্নতি, শিক্ষাছুটির বিপরীতে থাকা শিক্ষকদের চাকুরী স্থায়ীকরণ নিয়ে প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা, কালক্ষেপণ এবং উদাসীনতার বিষয়টি উল্লেখ করে হতাশা জ্ঞাপন করেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ শিক্ষক নিয়োগ/আপগ্রেডেশন বোর্ড অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এবং সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস হতে নিয়মিত উপচার্য না থাকা, পরবর্তীতে ১১ মাস রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্যের নির্বাচনী বোর্ড, পদোন্নতি বোর্ড এবং রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহবানের এখতিয়ার না থাকায় এবং বর্তমান উপচার্য দায়িত্ব নেয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বাের্ডের সভা আহবান না করায় প্রায় ১৫০ শিক্ষক সাড়ে তিন বছর ধরে ন্যূনতম ৬ মাস যাবত পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
বর্তমান প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষকদের চরম হতাশার ও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, শিক্ষক সমিতির দাবির মুখে গত জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড শুরু হলেও মার্চ মাসের শেষের দিকে এসে শেষ করতে না পারা, ভাইবা বোর্ড এর আহবান করে তারিখ পিছিয়ে দেয়া, ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে গঠিত পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আপগ্রেডেশন নীতিমালা সংশোধন কমিটির সুপারিশ আমলে না নেওয়া, বিভিন্ন সময়ে বর্তমান শিক্ষক সমিতির সদস্যদের সাথে উপাচার্য’র আলােচনায় প্রাপ্যতার তারিখ হতে আর্থিক সুবিধাসহ প্রমােশন নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
শিক্ষকরা বলেন, প্রশাসনের উদাসীনতা সমগ্র শিক্ষকদের প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞার সামিল। দেশের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে (১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক সুবিধাসহ) প্রাপ্যতার তারিখ (ডিউ ডেট) হতে আপগ্রেডেশনের জন্য সু-স্পষ্ট বিধান থাকলেও জাতির জনকের নামে নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২/৩ বছর যাবত পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষকদের আর্থিক, মর্যাদাগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পেশাগত জটিলতা নিরসনে প্রাপ্যতার তারিখ (ডিউ ডেট) থেকে আর্থিক সুবিধাসহ আপগ্রেডেশন বাস্তবায়নে বর্তমান প্রশাসনের এত অনীহা শিক্ষক সমাজের কাছে বােধগম্য নয়।’
প্রসঙ্গত, পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষকদের প্রাপ্যতার তারিখ হতে প্রমােশন ও শিক্ষা ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি গত বছরের ২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ধারাবাহিক মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।