ভিসি পদ শূন্য, স্থবিরতা বাড়ছে হাবিপ্রবির প্রশাসনিক কাজে

  © ফাইল ফটো

ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) পদ শূন্য হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৯ দিন আগেই গত ১৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২১ বছর হলেও এখনো প্রো-ভাইস চান্সেলর (প্রো-ভিসি) পদ শূন্য রয়েছে। ফলে দ্রুত ভিসি ও প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেমকে চার বছরের জন্য হাবিপ্রবির ষষ্ঠ ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। চলতি মাসের ২ তারিখে তার মেয়াদ শেষ হয়। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগেই রাতের আধারে স্বস্ত্রীক ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন ভিসি।

এ সময় তিনি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদারকে রুটিন দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে চিঠি দেন। কিন্তু ২ ফেব্রুয়ারি আদেশ অনুসারে রুটিন দায়িত্বও শেষ হয়ে যায়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে কাউকে রুটিন দায়িত্ব না দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব পালনেও কেউ থাকছে না।

এরপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদটি শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২১ বছর হলেও এখনো প্রো-ভিসির পদটি শূন্য রয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভিসির পদ শূন্য ও প্রো-ভিসি না থাকায় চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. খালেদ হোসেন বলেন, ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘদিন এই অবস্থা চললে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সংকট তৈরি হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ জানান, সদ্য বিদায়ী ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম স্যার মোট ৯ মাস ২৫ দিন (১৮ মার্চ থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত) বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বাসভবন থেকে এক মূর্হুতের জন্যও বের হননি। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছিল। তিনি দীর্ঘদিন বাসায় অবস্থান শেষে গত ১৩ জানুয়ারি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন এবং মেয়াদের বাকী ১৮ দিন ঢাকায় নিজ বাসভবনে বসে কাটিয়ে দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এ সময়ের মধ্যে করোনাকালে আটকে যাওয়া বিভিন্ন শিক্ষা-বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়মিত প্রমোশন-আপগ্রেডশন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর এ প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরীক্ষা গ্রহণ নানামুখী কাজ আটকা পড়ে যায়। তদুপরি প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভিসি শূন্য অবস্থায় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে রুটিন দায়িত্বও প্রদান না করার ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে নানমুখী কাজের চাপ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. ফজলুল হক জানান, আশা করছি শিগগির ভিসি নিয়োগ হবে। ভিসি নিয়োগ হয়ে গেলে পরীক্ষা ও অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সম্পন্ন করতে কোনও বাধা থাকবে না।


সর্বশেষ সংবাদ