মর্যাদা রক্ষায় ‘ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রভাত ফেরি, আলোচনা সভা, মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক শামীমা আক্তার।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ “ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু: প্রেক্ষিত ভাষার অন্তর্জগত” উপস্থাপনা করেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মসিউর রহমান এবং অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার, আইন অনুষদের ডিন মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া, প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান, বাংলা বিভাগের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান, প্রচার সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজ শিকদার, শিক্ষার্থী সলিম রেজা প্রমুখ।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। তার মাধ্যমে বাংলা ভাষা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে শক্তিশালী করার জন্য বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের উন্নতি ত্বরান্বিত করতে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে বাংলা ভাষা চর্চার প্রয়োজন।
প্রবন্ধ উপস্থাপক ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মসিউর রহমান ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ভাষার অন্তর্নিহিত বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার তার বক্তব্যে বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বাংলা ভাষার গুরুত্ব কখনও কমবে না।
আইন অনুষদের ডিন মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে জাতির পিতার নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট স্থাপন করা যেতে পারে।
প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান তার বক্তব্যে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় একটি ‘ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।
বাংলা বিভাগের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান তার বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলা ভাষার সার্থকতা রক্ষার্থে সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
শিক্ষক সমিতির প্রচার সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলা ভাষার কদর বাড়াতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজ শিকদার বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে পেয়েছি বাংলা ভাষা, আর বাংলা ভাষার মাধ্যমে পেয়েছি বাংলাদেশ।
এর আগে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় আরো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ, সকল হলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগ এবং সাংবাদিক সমিতি, বাধনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
পরে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিকালে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এসময় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।