প্রশাসনের আশ্বাসে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
আবাসন ব্যবস্থা ও রিভিউ ক্লাস নিশ্চিতসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে করে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা (সম্যক'১৬ ব্যাচ)।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে 'ডেইলি ক্যাম্পাস'কে এ তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাবিপ্রবি প্রশাসনের কাছে আমাদের পাঁচটি দাবি এবং একটি প্রশ্ন ছিলো। আমাদের চারটি দাবি নিয়ে প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট বিজ্ঞপ্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আমাদের আরো একটি দাবি ছিল সকল ধরনের ফি ৭০% মওকুফ করা। আমরা আশা করি প্রশাসন এই বিষয়েও অতিদ্রুত গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আমাদের করোনা সংক্রান্ত যে প্রশ্নটি ছিল সে বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী যদি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অপারগ (শারীরিক ও মানসিকভাবে) হয়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আবাসন সংকটের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতে আমরা হল খুলে দিতে পারছি না। তবে মেয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে প্রত্যেক বিভাগীয় প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছি। যদি কোন বিভাগ এ দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে তখন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফি মওকুফের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, পরিবহন ফি ও হলের আবাসন ফি পরিপূর্ণভাবে মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোন ধরনের ফি না দিয়েই বর্তমানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারবে এবং অন্যান্য ফি গুলো নিজেদের সুবিধা মতো সময়ে দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে কোন জরিমানা দিতে হবে না।
রিভিউ ক্লাসের ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, ১লা জানুয়ারি থেকে আমরা সব বিভাগকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে রিভিউ ক্লাস নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি সংখ্যা, পরীক্ষায় নম্বর দেওয়া এবং প্রতিটি পরীক্ষার আগে যেন উপযুক্ত গ্যাপ দেওয়া হয় সে ব্যাপারে মানবিক হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রধানদেরকে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরামর্শের ভিত্তিতে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কোর্স ভিত্তিক পরীক্ষার সময় নির্ধারণের ব্যাপারে তিনি বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সময় কমিয়ে দিয়েছি। দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় যতগুলা প্রশ্নের উত্তর করা যাবে সেই অনুসারেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় হল খোলা রাখা এবং রিভিউ ক্লাসের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়েই অনার্স ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তীতে ৫ দফা দাবি জানিয়ে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার পাশাপাশি দাবি মেনে নিতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টা সময় বেধে দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো ছিলো- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পরীক্ষার পূর্বে রিভিউ ক্লাসের ব্যবস্থা করা, যাবতীয় ফি ৭০% মওকুফ করা, শতকরা ১০০ ভাগ উপস্থিতি নম্বর দেয়া, পরীক্ষার মাঝে ক্রেডিট প্রতি দুইদিন করে বিরতি দেয়া। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের দাবির অন্তর্ভুক্ত প্রশ্নটি ছিলো- পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোনো শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অপারগ (শারীরিক ও মানসিকভাবে) হলে,তার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা কী? নির্ধারিত সময়ের ভেতর দাবি মেনে না নেয়ায় টানা আজ ৭ম দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা।