ক্যাম্পাস না খোলা পর্যন্ত মেসভাড়া মওকুফ চায় হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খুলে না দেওয়া পর্যন্ত মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা । তারা বলছেন, করোনার কারণে অনেকের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মেস ভাড়া দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবিউল আউয়াল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘এই সংকটময় অবস্থায় টিউশনি না থাকায় মেস ভাড়া প্রদান করা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবারের উপর এটি ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করেছে। গত এপ্রিল মাস থেকে ৫০% করে ভাড়া দিয়ে আসতেছি শুধু মেসে নামমাত্র কিছু জিনিস পত্র রাখার জন্য। আমরা চাই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মেস ভাড়া পুরোপুরি মওকুফ করা হোক।’’

আসমাউল হুসনা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘ক্যাম্পাস যতদিন বন্ধ থাকবে ততদিন আর কোনো প্রকার ভাড়া দিতে পারবো না।এমনকি মেস মালিক যদি এই বিষয়ে কোনরূপ জোর বা অশোভনীয় আচরণ করে তবে আমরা সকল শিক্ষার্থী একজোট হয়ে তার উপযুক্ত জবাব দিবো। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন এ বিষয়ে মেস মালিকদের সাথে পুনরায় আলোচনায় বসেন। কারণ এখানে প্রায় চার হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর অর্থনৈতিক ব্যাপার সম্পর্কযুক্ত। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম জানান, ‘‘বাঁশেরহাটের মেস গুলোর ব্যাপারটি দেখভাল করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক। তবে এ বিষয়ে তো একক কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া সম্ভব নয়।প্রয়োজন বোধে সার্বিক বিষয় নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসতে হবে।

মেসভাড়ার বিষয়ে ছাত্র পরামর্শও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত আমার কাছে নতুন করে কোনো শিক্ষার্থী মেসভাড়া নিয়ে অসন্তোষের কথা জানায়নি। তবে ছাত্ররা যদি আমাকে জানায় তাহলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কাজ করবো।’’

বাঁশেরহাট মেস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রায়হান মেস ভাড়ার বিষয়ে বলেন, ‘‘মেস ভাড়া ৫০% থেকে কমানোর সুযোগ নেই। তবে চুক্তি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা মনে করলে ৩১ ডিসেম্বরের পূর্বেই মেস ছেড়ে দিতে পারবে। এছাড়া আমরা নতুন একটি নিয়ম করেছি কোনো শিক্ষার্থী হলে উঠে গেলে তাকে আর পুরো বছরের ভাড়া দিতে হবে না।’’

জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম মেসভাড়ার বিষয়ে বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের বর্তমান সময়ে বাসায় অবস্থান করার কথা। কিন্তু তবুও তারা অনেকেই মেসে উঠেছে। যা সত্যি অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই আমরা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবো না। তাছাড়া উক্ত বিষয়টি দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আছে। তাদের নিজস্ব আইন আছে। আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো সহায়তা চাইলে তখন আমরা সে বিষয়ে সহায়তা করবো।’’

উল্লেখ্য যে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত এগ্রিল মাসে মেস ভাড়া ৫০% কমানো হয়। তবে এর মাঝেও কিছু মেস কর্তৃপক্ষ ভাড়ার বিষয়টি মানছেন না বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। তবে করোনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে মেস মালিক কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের জন্য আরো বেশি সহনশীল হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।


সর্বশেষ সংবাদ