৭ মাসে একদিনও অফিসে যাননি হাবিপ্রবি উপাচার্য

হাবিপ্রবি উপাচার্য
হাবিপ্রবি উপাচার্য  © টিডিসি ফটো

গত ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে বাসায় বসে অফিস করছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম। এতে করে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের একাংশ।

তাদের অভিযোগ, কোন প্রয়োজনে শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপাচার্যের বাসভবনে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা করেন না। শুধু তাই নয় মুঠোফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বেশিরভাগের ফোন রিসিভ করেন না। এদিকে, চলতি মাসের শুরুর দিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে কর্মবিরতিও পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ করোনার প্রাদুর্ভবের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেন। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অনুষ্ঠানে তিনি স্ব-শরীরে যোগদান করেননি। এমধ্যে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস থাকলেও তিনি শ্রদ্ধা জানাতে বাসা থেকে বের হননি। উপাচার্যের বাসভবনে বসেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে লাইভে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির এমন আচরণে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে একজন উপাচার্য কিভাবে ৭ মাস ধরে বাসায় বসে কাঁটাতে পারেন। এমন কোন উপাচার্যকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি ৭ মাস ধরে অফিস না করে তার বাসভবনে অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় আমরা সব সময়ই উপাচার্যকে সহযোগিতা করে আসছি। কিন্তু তিনি গত ৭ মাস ধরে তার কার্যালয়ে আসেন না। এমনকি আমরা যারা প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছি, তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজে তার বাসভবনে গেলেও তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেন না। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বাসভবনের দূরত্ব মাত্র ৩ মিনিটের পথ। স্যারের বয়স হওয়াতে করোনাকালে বাসায় বসে সব অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে না বলে জানান তিনি। উপাচার্যের মেয়াদ শেষের দিকে এবং শিক্ষক রাজনীতির কারণে শিক্ষকদের একটি অংশ উপাচার্যের বিরূদ্ধে এমন অভিযোগ আনছেন বলেও জানান তিনি। 

এ ব্যাপারে আজ শনিবার (৩১ অক্টোবর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।

তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম জানান, আমার বয়স হয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে আমি অসুস্থ। তাই কারও সঙ্গে দেখা করছি না।


সর্বশেষ সংবাদ