বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং চালু করবে সরকার

‘সেরা গবেষণা প্রকাশনা’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে চুয়েট ভিসি
‘সেরা গবেষণা প্রকাশনা’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে চুয়েট ভিসি  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, সরকার বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে র‌্যাংকিং পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে। এই র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান করে নিতে হলে গবেষণার দিকে আরো গুরুত্ব বাড়াতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই নতুন-নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, আবিষ্কার ও ক্ষেত্র তৈরি করতে গবেষণা কাজে উদ্ধুদ্ধ করার জন্য বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড চালু করেছি।

আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে অনুষদভিত্তিক ‘সেরা গবেষণা প্রকাশনা’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তেব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গবেষণা খাতে চুয়েটের সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি, শিক্ষকদের আধুনিক ও উন্নত জ্ঞান-আবিষ্কার এবং ক্ষেত্র সৃষ্টিতে গবেষণা কাজে উদ্ধুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এই অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। প্রথমবার পাঁচটি অনুষদের অধীন এই সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো উদ্ভাবন ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। গবেষণা কাজের মাধ্যমে এই জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অফ অ্যাক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে হলে গবেষণার বিকল্প নেই। 

তিনি আরও বলেন, আজকের দিনটি নিঃসন্দেহে চুয়েটের গবেষকদের জন্য একটি মাইলফলক। আমি অ্যাওয়ার্ডজয়ী গবেষকদের পাশাপাশি যারা রিসার্চ পেপার জমা দিয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

গবেষণা ও সম্প্রাসরণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রণজিৎ কুমার সূত্রধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আলম, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহম্মদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী।

এবার সেরা গবেষণা প্রকাশনা অ্যাওয়ার্ড নির্বাচন কমিটি কর্তৃক ২০১৯ সালের সেরা গবেষকগণ হলেন- স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের অধীনে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রভাষক কে.এম. আশরাফুল ইসলাম, পুরকৌশল অনুষদের অধীনে পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রিয়াজ আক্তার মল্লিক, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু হাসনাত মোহাম্মদ আশফাক হাবীব, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের অধীনে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. গোলাম হাফেজ এবং যন্ত্রকৌশল অনুষদের অধীনে যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ভুঁইয়া।

জানা যায়, দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তাদের সবশেষ প্রকাশিত ৪৫তম বার্ষিক প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সরকারের কাছে মোট ২৯টি সুপারিশ করেছে। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে ইউজিসির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এ প্রতিবেদন জমা দেন।

এ সুপারিশমালার শীর্ষে রয়েছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং ও ইউজিসির সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ। র‌্যাংকিংয়ে গুরুত্ব দিয়ে ইউজিসি বলেছে, কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য পদ্ধতিগত র‌্যাংকিং অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। র‌্যাংকিং পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন, সঠিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন, আর্থিক সুবিধা অর্জন, নতুন গবেষকদের গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনে সহায়তা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গঠনমূলক প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে সহায়তা করে থাকে। তাই সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানের র‌্যাংকিং পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ইতোমধ্যে গঠিত বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল ও ইউজিসি একত্রে কাজ করতে পারে।