জেরায় শিবির নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন আবরারের বাবাকে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার এক বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর)। এর আগের দিন সোমবার ট্রাইব্যুনালে বাদী বরকতউল্লাহর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। কুষ্টিয়ার অবসরপ্রাপ্ত এই ব্র্যাককর্মী জবানবন্দি দিতে গিয়ে কেঁদে কেঁদে সন্তান হত্যার বিচার চান।
আবরার ফাহাদ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যুক্ত ছিলেন, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে ছাত্রশিবিরের ইন্ধনে- জেরায় আসামি পক্ষের আইনজীবীদের এমন সব প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নিহত এই বুয়েট শিক্ষার্থীর বাবা মো. বকরত উল্লাহকে।
পড়ুন: আবরার হত্যার ১ বছর: ধরা ছোয়ার বাইরে ৩ আসামি
আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার মাঝে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আট ঘণ্টা বাদী বরকত উল্লাহকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। শিবির সংক্রান্ত এসব প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ বলেন তিনি। ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে বরকতউল্লাহকে জেরার মধ্য দিয়ে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।
মঙ্গলবার জেরায় বরকত উল্লাহকে আসামি পক্ষের এক আইনজীবী বলেন, আবরার ছাত্রশিবিরে যুক্ত ছিলেন। উত্তরে ‘না’ বলেন আবরারের বাবা।
আরেক আইনজীবী বলেন, শিবিরের কমীদের ইন্ধনে ছাত্রলীগের কমীদের উপর দায় চাপিয়ে এ মামলার এজাহার করা হয়েছে এবং এজাহার দাখিলের সময় শিবিরের সদস্যদের দিয়ে বাদী পরিবেষ্টিত ছিলেন। এ কথার উত্তরেও ‘না’ বলেন বাদী।
দেখুন: ‘নতুন জুতাটা এক সপ্তাহও পরতে পারেনি ছেলেটা’
আবরারের লাশ কয়েকজন শিবিরকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে নিয়ে বাদীর শ্যালক আব্দুল কাদেরকে বুঝিয়ে দেন বলে দাবি করেন এক আইনজীবী। একথায় বাদী বলেন, ‘আমি তাদের চিনি না। আমি মর্গে ঢুকি নাই, বাইরে ছিলাম।’
যে দুজন ছাত্র আবরারকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মামলায় আসামি করা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় আবরারর বাবাকে, তবে তিনি নিরুত্তর থাকেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঞা জানিয়েছেন, আজ বুধবার মামলার রেকর্ডিং কর্মকর্তা এসআই সোহরাব হোসেন এবং সুরতহালের সাক্ষী এস আই দেলোয়ার হোসেন সাক্ষ্য দেবেন।
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে শিবিরকর্মী আখ্যায়িত করে গত বছরের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
পরদিন আবরারের বাবা বুয়েটের ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ মোট ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। আসামিদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।