সেমিস্টার থেকে ফিরে বাৎসরিক পরীক্ষার দাবি শিক্ষার্থীদের
- হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৩৩ PM , আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৩৩ PM
সেমিস্টার থেকে ফিরে এসে বাৎসরিক পরীক্ষা পদ্ধতি চালুসহ আট দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদীয় শিক্ষার্থীবৃন্দ।
মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কৃষি অনুষদের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সামাজিক দুরত্ব মেনে অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধন শেষে রেজিস্ট্রার এর মাধ্যম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করে তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা কৃষি অনুষদের ১৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা ভর্তি হই এবং আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ৩রা মার্চ। লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এর চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয় ২৯ আগষ্ট এবং শেষ হয় ১৭ অক্টোবর। দুঃখজনক হলেও সত্যি এক বছর অতিক্রম হলেও এখনো আমরা আমাদের লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এর ফলাফল পাইনি। বর্তমানে আমরা লেভেল-১ সেমিস্টার-২ তে অধ্যয়নরত।
তারা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগেই আমাদের একাডেমিক কোর্স শেষ হয়ে গেছে। এমনকি আমরা আমাদের এনরোলমেন্ট ফি জমা দিয়েছি। এছাড়া বারবার ডীন অফিস, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, সম্মানিত শিক্ষকদের দ্বারপ্রান্তে গিয়েছি কিন্তু তারা আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থায় সেশনজট কমাতে এবং একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখতে আমরা প্রশাসনের কাছে ৮ দফা দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না করলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবির মধ্যে ছিলো-
(১) অনতিবিলম্বে লেভেল -১ সেমিস্টার-১ এর ফলাফল দিতে হবে (২) সিলেবাস শর্ট করে লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে (সম্ভব হলে অনলাইনে)। (৩) যদি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি লেভেল-২ সেমিস্টার-১ এর ক্লাস শুরু করতে হবে (৪) সেশনজট কমানোর জন্য বাকি সেমিস্টার গুলো ৫ মাসে শেষ করতে হবে। (৬) প্রাক্টিক্যাল এর এক্সপেরিমেন্ট কমিয়ে প্রেজেন্টেশন অথবা এসাইনমেন্ট সিস্টেম শুরু করতে হবে (৬) এই মহামারীর প্রেক্ষিতে প্রয়োজনে ইয়ারলি সিস্টেম চালু করতে হবে (বছরে একটি পরীক্ষা) (৭) সেমিস্টার শুরুর আগে একাডেমিক ক্যালেন্ডার দিতে হবে যেখানে মিড এবং ফাইনাল পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ উল্লেখ থাকবে এবং (৮) ফাইনাল পরীক্ষার পর অনধিক তিন মাসের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
মানববন্ধনে আট দফা দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় তারা আরও বলেন, “সময়ের মাঝেই কোর্স সমাপ্ত করতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত (১ঃ২০) রাখতে হবে। করোনা পরবর্তী সময়ে দ্রুত ক্লাস কার্যক্রম সমাপ্ত করে পরবর্তী সেমিস্টারে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ক্লাসরুম সংকট দ্রুত নিরসন করতে হবে।বর্তমানে একই ক্লাসরুমে ১২৫ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করি যা সত্যিই দুঃখজনক। তার উপর ক্লাস রুমে কোনো সাউন্ডসিস্টেম এর সুবিধা না থাকায় ভালো করে ক্লাস বুঝা যায় না।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ফুয়াদ খান, আবুল বাশার, তোফাজ্জল তমাল, সাজিয়া আফরিন, রওনক জাহান, সুমন আহমেদ, সিফাত ইসলাম সহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. ফজলুল হক জানান, “সেশনজট নিরসনে ৫ মাসে সেমিস্টার শেষ করার ব্যাপারটা অতি যৌক্তিক, আমরা এ ব্যাপারে কাজ করবো। আর পরীক্ষা না নিয়ে পরবর্তী সেমিস্টারের ক্লাস নেয়া সম্ভব নয়, তবে অনলাইনে এক্সাম নিয়ে শুরু করা যায় কিনা তা একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করা হবে।”
পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাপারটি এক্সাম কন্ট্রোলার এর বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার সংশ্লিষ্ট ফ্যাকাল্টি থেকে সংগ্রহ করবে শিক্ষার্থীরা, এটি ফ্যাকাল্টির বিষয়।