আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান বুয়েটের নতুন উপাচার্য
শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান বুয়েটের নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা জানান।
সকালে তিনি স্মৃতিসৌধে এলে তাকে স্বাগত জানান সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে বুয়েটের উপ-উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যে কোনো হত্যাকাণ্ডই বেদনাদায়ক উল্লেখ করে বুয়েটের নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আববার হত্যাকাণ্ডে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে । আমরা আশা করি খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। আবরারের হত্যার পরে বুয়েটের সব শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া বুয়েট কর্তৃপক্ষ আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পর দিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ছয়জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন ৮ জন।
গ্রেফতার হওয়া ২২ জন হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো: অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো: মেহেদী হাসান রবিন, মো: মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো: মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো: মনিরুজ্জামান মনির, মো: আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো: মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, আসামি মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার তিন আসামি এখনো পলাতক। তারা হলেন মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।