৭ বছরে বশেমুরবিপ্রবিতে আবাসন সুবিধা কমেছে ২০ শতাংশ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) আইনের ৪১নং ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় বিধান দ্বারা নির্ধারিত স্থান ও শর্তাধীনে বসবাস করার নিয়ম রয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠার ১০ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা নিশ্চিত করতে পারেনি। বরং শিক্ষার্থীপ্রতি আবাসন সুবিধার হিসেব করে দেখা গেছে, গত ৭ বছরে আবাসন সুবিধা কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের আসন সংখ্যার হিসেবে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে, যা শতকরা হিসেবে মাত্র ১৬ শতাংশ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বশেমুরবিপ্রবিতে আবাসন সুবিধা পেতো প্রায় ৩৬.৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ গত সাত বছরে আবাসন সুবিধা কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ ৬টি প্রতিবেদনেই বশেমুরবিপ্রবির আবাসন সুবিধা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ার চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীপ্রতি আবাসন সুবিধা ছিলো ৩৬.৪৪ শতাংশ, ২০১৪ সালে ছিলো ৩৬.২৮ শতাংশ, ২০১৫ সালে ছিলো ২৮.৭২ শতাংশ, ২০১৬ সালে ছিলো ২০.৬০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ছিলো ১৫.০৮ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ছিলো ১৩.৩৭ শতাংশ।
ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদনসমূহে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আবাসন পরিসংখ্যান হিসেব করলে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ৩১.৫০ শতাংশ ছাত্র আবাসন সুবিধা পেতো যা ক্রমান্বয়ে কমে ২০১৮ সালে হয় ১০.১৪ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩ সালে ৪৯.৭২ শতাংশ ছাত্রী আবাসন সুবিধা পেতো যা ক্রমান্বয়ে কমে ২০১৮ সালে হয় ২১.৪৮ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মনে করেন, অনিয়ন্ত্রিতভাবে শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির ফলেই ক্রমান্বয়ে আবাসন সংকট প্রকট হয়েছে। ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বশেমুরবিপ্রবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে আসন সংখ্যা ছিলো ৬৭০টি; যা মাত্র ৭ বছরেই প্রায় ৪ গুণ বেড়েছে। বশেমুরবিপ্রবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে স্নাতক প্রথম বর্ষে আসন সংখ্যা রয়েছে ২ হাজার ৯৯২টি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে সংকট নিরসনে আমরা দুটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি— প্রথমত আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আমরা আসন সংখ্যা কমানোর চিন্তা-ভাবনা করছি; দ্বিতীয়ত হল সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দুটি হল ৬ তলা পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ শুরু করেছি। এছাড়া তৃতীয় ফেসে একটি ১০ তলা ছাত্র হল এবং আরেকটি ১০ তলা ছাত্রী হল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি।