২৪ মে ২০২০, ১৫:৫৯

তিনবেলা খাবার জোটে না, ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা

  © ফাইল ফটো

নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ১৭৬ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীর বেতন বন্ধ রয়েছে। এতদিন ছোটখাটো ব্যবসা কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করে চললেও করোনাভাইরাসের কারণে সেই পথও এখন বন্ধ।

তাই অন্যান্য বছরগুলোয় ঈদ আনন্দের বারতা নিয়ে আসলেও এবার এসেছে বিষাদ হয়ে। দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত রুমা কাজী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমাদের পরিবারে ছোটো বাচ্চারা রয়েছে। ঈদে তারা আশা করে নতুন পোশাকের, ভালো খাবারের। কিন্তু প্রায় আটমাস যাবৎ আমাদের বেতন বন্ধ।’ তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও কোনো আয় নেই। এখন আর বাচ্চাদের কোনো উত্তর দিতে পারি না। আমরা যে কতটা অসহায়, কতটা দুঃসময় পার করছি কাউকে বলে বোঝানো যাবেনা।’

চার সদস্যের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ইব্রাহিম খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেতন পেলে হয়তো আমাদের পরিবারেও আজ ঈদের আনন্দ থাকত। কিন্তু আট মাস যাবৎ বেতন নেই। তাই আমাদের কোনো ঈদও নেই। সন্তান দু’টো ছোট, তারা এখনো অভাব কি বোঝে না, নতুন পোশাকের আবদার করে। তাদের এটা ওটা বুঝিয়ে শান্ত করি, আর মনে মনে শুধুই কষ্ট পাই।’ তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা এখন তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থাই করতে পারি না, ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা।’

অনেকটা একই অবস্থার কথা উল্লেখ করে আরেক কর্মচারী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘একসময় পরিবারের সবাই মোটামুটি আয় করতাম, বেশ ভালোই দিন যাচ্ছিল। কিন্তু এখন সে অবস্থায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘লোকলজ্জার কারণে কারো নিকট সাহায্যও চাইতে পারি না। এসব কারণে প্রতিবছর ঈদ আমাদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসলেও এবারের ঈদে কোনো আনন্দ নেই।’

কিছুটা আক্ষেপ করে এই কর্মচারী বলেন, ‘আসলে ঈদ কেবল ধনীদের জন্যই আনন্দের উপলক্ষ, গরীবের জন্য কোনো ঈদ নেই। বরং ঈদের দিনে অভাবটা আরো বেশি উপলব্ধি হয়।’

এদিকে, কর্মচারীরা দুঃসময় পার করলেও এই মুহুর্তে তাদের বকেয়া বেতন প্রদানের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বশেমুরবিপ্রবির চলতি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, ‘তাদের বিষয়টা তুলনামূলক জটিল এবং রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং ব্যতিত সমাধান সম্ভব নয়।’