নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশে এআইএস পরিবার
করোনাভাইরাসের ফলে সমগ্র দেশ জুড়েই নেমপ এসেছপ স্থবিরতা। বিশেষ করে নিন্মবিত্ত ও নিন্ম-মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ দূর্যোগ নিয়ে এসেছে করোনা ভাইরাস। সমাজের বিবেকবান ও বিত্তবানরা মানবেতর জীবন-যাপনকারী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালো একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন (এআইএস) পরিবার।
গত ২ মে এআইএসের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মুসফিকুস সালেহিন দিপ্ত ফেসবুকে AIS Business Club পেজে মানবিক আবেদন জানিয়ে পোস্ট দেওয়ার পরে এ বিভাগের অসংখ্য শিক্ষার্থী সাড়া দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় ৬ মে ঐ বিভাগের শিক্ষক মো: ফায়েকুজ্জামান মিয়া ‘শিক্ষার্থী-শিক্ষক কল্যাণ ফান্ড’ গঠনের জন্য পৃথক একটা স্ট্যাটাস দেওয়ার পরে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের উদ্যোগে প্রথম ধাপেই আজকে তারা ৬ জন শিক্ষার্থীকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেন। এ উদ্যোগ চলমান আছে এবং আরো ৬০ জন শিক্ষার্থীকে ধাপে ধাপে সাহায্য করা হবে।
উদ্যোগ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের একজন মুসফিকুস সালেহীন দিপ্ত বলেন ‘‘পবিত্র মাহে রমজান মাস চলছে। এই মাসে আমরা যারা সামর্থ্যবান আছি তারা প্রতিবছরই বড় একটা অংকের টাকা ঈদের কেনাকাটা বাবদ ব্যয় করি। সেই টাকার একটা অংশ দিয়ে যদি হঠাৎ করে আসা এই মহামারীর কারণে সৃষ্ট লকডাউনে এআইএস বিভাগের যেসকল ভাইবোন সাময়িক সমস্যায় পড়েছে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি, তাদের মুখে হাসি ফুটাতে পারি তাহলেই এটাই হবে আমাদের সবার জন্যে অনেক বড় পাওয়া। সেই দিক বিবেচনা করেই আমাদের এই ‘ছাত্র-শিক্ষক কল্যাণ ফান্ড’ এর আয়োজন।’’
উদ্যোগের অংশীদার এআইএস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে ইস্টার্ন ব্যাংকে কর্মরত ব্যাংকার নাসিমুল ইসলাম বলেন, সত্যি খুবই ভালো লাগছে এতদিন পর শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী, সিনিয়র, প্রিয় ছোট ভাই বোন, ও প্রাণের সহপাঠী সবাই এত সক্রিয়ভাবে এই ফান্ড কালেকশনের কাজ করছেন। এমন কাজ সারাজীবন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিভাগে ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমার বিশ্বাস আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে এই বিপদের সময় এবং পবিত্র রমজান মাসে আমরা আমাদের শিক্ষাগুরুদের দিক নির্দেশনায় ভালো কাজ করছি।
সবাই আশা করি যে যার মত সাহায্য করবেন। সবাইকে আল্লাহ পাক সুস্থ রাখার তৌফিক দান করুন। পরবর্তী কাজেও এমন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।
শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে সাড়া দেওয়া ঐ বিভাগের শিক্ষক মো. সোলাইমান হোসাইন বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। এই মহামারীতে আজ আমরা যদি আমাদের শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে ওরা যাবে কার কাছে। শুধু আর্থিকভাবে অস্বচ্ছলদেরকেই না, এই মহামারীর জন্য ঘর থেকে বের হতে না পারার কারণে যে সকল মধ্যবিত্ত পরিবার সমস্যাতে আছে তাদের জন্যও আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবো ইনশাল্লাহ।’’
তিনি আরো বলেন ‘‘কথা দিচ্ছি, যতক্ষন নিজের পরিবার খেয়ে পরে থাকবে ততক্ষণ আমার এআইএস পরিবারের প্রতিটি সদস্য খেয়ে পরে বেঁচে থাকবে ইনশাল্লাহ। সবার প্রত্যাশা মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের এ বন্ধন অটুট থেকে এগিয়ে যাবে এআইএস বিভাগ।’’