১৭ এপ্রিল ২০২০, ২০:৪৩

বেতন বন্ধ ৭ মাস, বললেন— ‘একবেলা খেলে দুই বেলা না খেয়ে থাকি’

  © ফাইল ফটো

বেতন বন্ধ প্রায় সাত মাস যাবৎ। ছোট একটা দোকানই ছিলো একমাত্র ভরসা। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সেটিও এখন বন্ধ। অসুস্থ পিতা, স্ত্রী এবং দুই সন্তানসহ পাঁচজনের সংসার নিয়ে তাই এখন কঠিন এক দুঃসময় পার করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী মাধব দাস।

নিজের দূরাবস্থা বোঝাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বিশ্বাস করুন এখন আমার হাতে একটা টাকাও নেই। একবেলা খেলে দুই বেলা না খেয়ে থাকি। সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে অন্য কারো কাছে সাহায্যও চাইতে পারছিনা। এই সময়ে যদি বকেয়া বেতনটা পেতাম খুব উপকৃত হতাম।’

শুধুমাত্র মাধব দাস নয়, নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতায় প্রায় সাত মাস যাবৎ বেতন বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির দৈনিক মজুরি ভিত্তিক প্রায় ১৭৬ জন কর্মচারীর। এতদিন যাবৎ কোনো কোনো কর্মচারী ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করে বা পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করে চললেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তাদের সেই আয়ও এখন বন্ধ।

চার সদস্যের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ইব্রাহিম খান বলেন, ‘গত সাত মাসে সংসার চালাতে গিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা ধার করেছি। এখন আর ধার করার মত অবস্থাও নেই। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর দৈনিক ভিত্তিতে কিছু কাজ করলেও করোনার কারণে এখন সেই কাজ ও বন্ধ। জানিনা সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবো।’

অনেকটা একই সমস্যার কথা জানিয়ে আরেক কর্মচারী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বেতন বন্ধ থাকায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করে চলতাম। কিন্তু করোনার কারণে তাদের আয়ও বন্ধ। লোকলজ্জার কারণে কারো নিকট সাহায্যও চাইতে পারছিনা, যদি বকেয়া বেতনটা পেতাম আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা খুবই উপকৃত হতাম।’

তবে কর্মচারীরা দুঃসময় পার করলেও এইমুহুর্তে তাদের বকেয়া বেতন প্রদানের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তাদের বিষয়টা তুলনামূলক জটিল এবং রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং ব্যতিত এটি সমাধান সম্ভব নয়।’